কাটমানিও দেবো না, দলেও থাকব না

উন্নয়নের বরাদ্দ থেকে কাটমানি দাবি করছেন দলেরই নেতারা। কাটমানি না দিলে বাড়িতে চড়াও হওয়ার হুমকি। তাই কাটমনিও দেব না দলেও থাকবো না ' এই অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলত্যাগ করলেন শাসক দলের পঞ্চায়েত সদস্যা। দল ছেড়েই কংগ্রেসে যোগ দিলেন তিনি।

সোমবার সকালে মালদহের চাঁচলে অলিহোন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজনগর বুথের পঞ্চায়েত সদস্য-সহ একশো জন মহিলা তৃণমূল কর্মী ঘাসফুল ছেড়ে কংগ্রেস শিবিরে যোগ দিলেন।

রাজ্যে শূন্য থাকলেও পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শক্তি বৃদ্ধি করছে জাতীয় কংগ্রেসের। আর ঘর ভরাচ্ছে শাসকদলের জন প্রতিনিধিরা। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ফের ধাক্কা খেল শাসক শিবির। একমাসের ব্যবধানে পর পর দুইজন শাসকদলের পঞ্চায়েত সদস্যের দলত্যাগে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। জানা গিয়েছে, ১৩ আসন বিশিষ্ট অলিহোন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতে ৯ জন তৃণমূল থেকে নির্বাচিত হয়ে বোর্ড গঠন করে। তারপরে মাঝে মধ্যেই একেরপর এক গোষ্ঠীকোন্দল দেখা দেয়ে সেই পঞ্চায়েতে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিআইএম ১ ও কংগ্রেস ৩ টি আসন পায়। এবার সেই ঘাঁটিতে নিজের মাটি শক্ত করতে মরিয়া কংগ্রেস।

মালদহের চাঁচল-১ ব্লকের শাসকদল পরিচালিত অলিহোন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের পরপর দুইজন তৃণমূল সদস্য কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন।সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে চাঁচলের দলীয় কার্যালয়ে কংগ্রেসে যোগ দেন রাজনগর সংসদের পঞ্চায়েত সদস্য ফুলমণি দাস। ফুলমনির সঙ্গে যোগ দেন শতাধিক মহিলা কর্মী। এমনই দাবি করা হয়েছে নেতৃত্বের তরফে। অলিহোন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা ফুলমণি দাসের অভিযোগ, উন্নয়নের বরাদ্দ থেকে কাটমানি দাবি করছেন দলেরই নেতা। কাটমানি না দিলে বাড়িতে চড়াও হওয়ার হুমকি দিচ্ছেন তিনি। শুধু অভিযোগ তুলেই ক্ষান্ত হননি। ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিলেন কংগ্রেসে।

যদিও সমস্ত রকম অভিযোগ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে চাঁচল ১ নং ব্লক তৃনমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। চাঁচল ১ নং ব্লক তৃনমূল কংগ্রেসের সভাপতি শেখ আফসার আলী বলেন, ওই পঞ্চায়েত সদস্যর অভিযোগ মিথ্যা। কেউ উনার কাছ থেকে টাকা চাইনি। আসলে উনি টাকার ভাগ পাচ্ছেন না তাই দল তাগ করছেন। ওই পঞ্চায়েত সদস্যার যোগদান দলে কোনও প্রভাব পড়বে না আরও দল শক্তিশালী হবে বলে দাবি তার।


অন্যদিকে নির্বাচনের আগে চাঁচোলের তৃণমূলের সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত শূন্য হবে হুশিয়ারি দিলেন চাঁচল ১ নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। যদিও এই যোগদান প্রসঙ্গে তৃণমূলকে কটাক্ষ ছুড়েছে বিজেপি। চাঁচলের বিজেপি নেতা সুমিত সরকার বলেন, শুধু কংগ্রেসের যোগদান নয়, বিজেপিতে যোগদানের জন্য নাম লেখাচ্ছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত প্রধান। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যে যেদিকে পারছে সেদিকে ছুটছে। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূলে। প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও থেকে উঠে আসছে গোষ্ঠীকোন্দলের প্রকাশ্য গোলাবারুদ। চাঁচলও তার ব্যতিক্রম নয়। এখানে খোদ বিধায়কই এখন দলীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের তোপের মুখে। এই পরিস্থিতি শাসকদলের অস্বস্তি আরও বাড়ালেন এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা।

Post a Comment

0 Comments