মঙ্গলবার বিকেলে ডায়মন্ড হারবার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শুভেন্দুর সঙ্গে অনেকের কথোপকথনের প্রিন্ট আউট তুলে ধরেন অভিষেক। সেগুলি পড়েও শোনান তিনি। শুভেন্দু সরাসরি নাম না নিলেও, তৃণমূল নেতৃত্ব কেন প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন করলে, প্রিন্ট আউট পড়ে শওনাতে শুরু করেন অভিষেক। তিনি বলেন, "এই লোকটির মানসিক অবস্থা ঠিক নয়। কেন এমন বলছি, তার জন্য একটি জিনিস দেখাই আপনাদের। প্রিন্ট আউট এনেছি আমি। গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টেয় রাজভবনের বাইরে সাংবাদিক বৈঠক করেন উনি। বলেন, মমতার নাম ধরে বেগম বলেননি তিনি। তাহলে কেন গায়ে মাখছেন মমতা! 'ঠাকুর ঘরে কে, আমি তো কলা খাইনি', এ সব বলেন উনি।"
কিন্তু সন্ধের পরই শুভেন্দু অন্য কথা বলেন বলে দাবি করেন তিনি। শুভেন্দুর সঙ্গে জনৈক ব্যক্তির কথোপকথন তুলে ধরে অভিষেক বলেন, "সাড়ে ৪টেয় ই কথা বলার পর সন্ধে ৬টা বেজে ৪৭ মিনিটে একজনের সঙ্গে কথা হয় ওঁর। ওই ব্যক্তি ছবি পাঠিয়ে লেখেন, 'আপনার সুস্থতা কামনা করি'। তাঁকে উত্তর দিয়েছেন এই বলে যে, 'তোদের বেগম মমতা কেমন আছে?' অর্থাত্ যে লোক বিকেলে বললেন মমতাকে বেগম বলেননি, দু'ঘণ্টা পর তিনিই বেগম মমতা লিখছেন।"
অভিষেক আরও বলেন, "এমন একাধিক আছে। এক মহিলা ওঁকে লেখেন, 'আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।' পাল্টা তাঁকে জবাব দিয়েছেন, 'তোর বর কয়লা ভাইপোর চোখ ঠিক হল?' ইনি নারীর সম্মান, নারীর সুরক্ষা নিয়ে কথা বলেন! এক মহিলা, যিনি ওঁর ছোট বোনের মতো, সুস্থতা কামনার প্রত্যুত্তরে তাঁকে 'তোর বর কয়লা ভাইপো' লিখেছেন। রাত ৯টা ৪৬ মিনিটে সুস্থতা কামনা করা আর এক জনকে লেখেন, 'তোর মা মমতা বেগম কেমন আছে'?" 'তোর বর কয়লা ভাইপো' কথাটি শুভেন্দু কাকে লিখেছেন, যা যদি খোলসা করেননি অভিষেক। তবে কয়লা-কাণ্ডে অভিষেককে নিশানা করে বরাবর 'কয়লা ভাইপো' বলে শুভেন্দু আসলে অভিষেককেই নিশানা করেছেন বলে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল। তাহলে কি অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওই কথা লেখেন শুভেন্দু, তৈরি হয়েছে ধন্দ।
অভিষেকের প্রশ্ন, এর পরও যদি কেউ বলেন, গায়ে মাখছেন কেন, তাহলে কী বলবেন? তাঁর কথায়, "মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দরকার ওঁর। সকালে, দুপুরে, বিকেলে, সন্ধেয় এবং রাতে, এক এক সময়, এক এক কথা বলছেন। আতঙ্কে ভুগছেন উনি। অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় বাড়ি থেকে বেরোলেই আতঙ্ক। চায় আমি চুপ করে ঘরে বসে থাকি। ও কী ভাবে? যা ইচ্ছে তাই, যাকে ইচ্ছা তাকে, এ সব বলতে পারে ও? যে বীরবাহা হাঁসদা এবং দেবনাথ হাঁসদাকে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করেছেন, তাঁরা জঙ্গলমহলের মাটির ছেলে এবং জঙ্গলকন্যা। বীরবাহাকে মন্ত্রী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর উনি বলছেন, 'এরা আমার জুতোর তলায় থাকে।' অখিল গিরির মন্তব্য দল সমর্থন করে না। সে দিনই নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছি আমরা। আমাদের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমা চেয়েছেন। বীরবাহাকে নিয়ে ওর মন্তব্যে বিজেপি-র সর্বোচ্চ নেতা ক্ষমতা চাইতে পারবেন? ক্ষমতা আছে ওদের!"
0 Comments