সংবিধানের গুরুত্ব নিয়ে বোঝাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী

একদিন আগেই সংবিধান দিবস স্মরণ রাজ্য বিধানসভায়। ২৬ নভেম্বর সংবিধান দিবস। নির্ধারিত দিনের আগে উদযাপনকে ঘিরে সমালোচনায় বিরোধীরা। তারই মধ্যে বিধানসভার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে তৈরি প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী স্মারক ভবনের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০১৪ সাল থেকে দেশে ২৬ নভেম্বর দিনটি সংবিধান দিবস হিসাবে পালিত হয়। তার আগে এটি ছিল ন্যাশনাল ওয়ার ডে। স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের স্মরনে এই দিনটি উদযাপন করা হত। ১৯৪৯ সালের ২৬ শে নভেম্বর দেশের মানুষের স্বার্থ, মৌলিক অধিকার রক্ষা ও ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষে তৈরি ভারতবর্ষের সংবিধান, গণপরিষদে গৃহীত হলেও, ২০১৪ সাল থেকে এই দিনটি দেশে সংবিধান দিবস হিসাবে স্বীকৃত হয়। এবার, এই সংবিধান দিবসের উদযাপন নির্ধারিত দিনের একদিন আগেই সেরে ফেলছে রাজ্য বিধানসভা।

বিধানসভা সূত্রে জানা গেছে, কাল, রাজ্য বিধানসভার চলতি অধিবেশনে এ বিষয়ে বিশেষ একটি প্রস্তাব পেশ করবে সরকার। সেই প্রস্তাবের সূত্র ধরেই সংবিধান দিবস স্মরনে আলোচনা হবে বিধানসভায় সভায়। বক্তার তালিকায় মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধীদল নেতা ছাড়া পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা এবং আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিও থাকবেন। মৌলিক অধিকার রক্ষায় ও ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠায় সংবিধানের গুরুত্ব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরা কী বলেন, কাল সে দিকেই দৃষ্টি থাকবে সকলের।

অনুমান, সংবিধান দিবসকে কেন্দ্র করে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে কালকের সভা রাজনৈতিক আক্রমন ও প্রতি আক্রমনে উত্তাল হতে পারে। সংবিধান দিবসের উদযাপন অনুষ্ঠান একদিন আগে করার বিষয়ে স্পীকার বলেন, " ২৬ নভেম্বর ছুটি থাকায় ওই দিন অধিবেশন করা যাবে না। সে কারনেই সংবিধান দিবসের উদযাপন একদিন এগিয়ে আনতে হয়েছে।" যদিও, এই ঘটনাকে মুখ্যমন্ত্রীর তুঘলকি আচরন বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বাম ও কংগ্রেসের তরফেও এর সমালোচনা করা হয়েছে। সিপিএমের সূজন চক্রবর্তী বলেন, এটা মুখ্যমন্ত্রী ও এই সরকারের কাছে অনভিপ্রেত নয়। এরা প্রয়োজনে মণীষিদের জন্মদিন থেকে শুরু করে সংবিধান দিবসের দিনক্ষন সবই বদলে দিতে পারে। প্রাক্তন বিরোধীদল নেতা আব্দু্ল মান্নানের মতে, গনতন্ত্র, সংবিধান এসবের প্রতি যাদের বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা নেই, সেই মুখ্যমন্ত্রী ও তার সরকারের কাছে এটাই স্বাভাবিক।''

এই পরিস্থিতিতে, কাল রাজ্য বিধানসভায় প্লাটিনাম জুবিলি স্মারক ভবনেরও উদ্বোধন করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য বিধানসভার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই ভবন তৈরির কাজ শুরু হলেও, করোনা মহামারি জনিত কারনে ভবনের নির্মান সম্পূর্ণ করতে কিছুটা দেরি হল বলে দাবি করেছেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিধানসভা চত্বরে এই ভবনটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। ভবনে সংগ্রহশালা, আন্তর্জাতিক মানের একটি গ্রন্থাগার রয়ছে। থাকছে সাড়ে চারশো আসনের একটি কনফারেন্স রুম। এছাড়া বিধানসভার মোট ৪১ টি কমিটির নিয়মিত বৈঠকের জন্য জায়গা। অধ্যক্ষের দাবি,বহু প্রতীক্ষিত এই ভবনটি রাজ্য রাজনীতির ইতিহাস ও গবেষনার ক্ষেত্রে একটি অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে।

Post a Comment

0 Comments