বিজ্ঞপ্তি তো প্রকাশ হয়ে গেছে, এবার টেট ঘিরে প্রস্তুতি পর্বও শুরু হয়ে গেল প্রশাসনের অন্দরে। বৃহস্পতিবার টেট প্রক্রিয়ার নানা খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে নবান্নে বৈঠক সারলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সব জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং পুলিশ কমিশনার। ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালও। কিন্তু, বৈঠকে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না স্কুলশিক্ষা সচিব মণীশ জৈন।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে টেট-র ফলপ্রকাশের দিনক্ষণ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নবান্নে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল দাবি করেছেন, টেট হওয়ার ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই পরীক্ষার ফলপ্রকাশ করে দেওয়া হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছেন, এ বারের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্রের একটি কপিও বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন।
টেট মানেই কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী। কয়েক হাজার পরীক্ষাকেন্দ্র। তাই প্রশাসনের তরফেও সার্বিক প্রস্তুতি প্রয়োজন বলে মনে করছে নবান্ন। পরীক্ষার ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে সচল পথঘাট, সবদিকেই গুরুত্ব দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে এদিন বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন মুখ্যসচিব। সূত্রের খবর, পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য জেলাশাসক এবং এসডিও অফিসের তরফে হেল্পলাইন চালু করার কথা বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সেই সমস্ত হেল্পলাইন নম্বর যাতে জনসাধারণের মধ্যে ঠিকমতো প্রচার করা হয়, তা-ও নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
এদিনের বৈঠকে বলা হয়, সম্প্রতি সেতুর মেরামতির কারণে সাঁতরাগাছি ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। প্রাথমিকের টেটের দিন যাতে সাঁতরাগাছি সেতুতে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা সচল থাকে, তা দেখতে হাওড়া পুলিশের পুলিশ কমিশনারকে বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য সচিব। পরীক্ষা চলার সময়েও যাতে হাওড়া-কলকাতার মধ্যে কোনও রকম সমস্যা না হয়, সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে হাওড়া ও কলকাতা পুলিশের সুপারকে।
শুধু যান চলাচলই নয়, নবান্ন সূত্রের খবর, পরীক্ষা চলাকালীন প্রত্যেকটি পরীক্ষাকেন্দ্রে যাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্সংযোগ তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব থাকবে রাজ্য বিদ্যুত্ দফতরের উপর। এছাড়াও, নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকছে মেটাল ডিটেক্টর। থাকছে বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্সের ব্যবস্থাও। পরীক্ষাকেন্দ্রে কী করা যাবে, কী নয়, কী কী ব্যবস্থা রাখতেই হবে, এই সমস্ত নির্দেশিকা সংবলিত ১৬ দফা গাইডলাইন ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে জেলাগুলিকে। পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা যায় কি না, তা জানতে চেয়ে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে পর্ষদের তরফে।
সব মিলিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থাপনা থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া, কোনও কিছুতেই যে বিন্দুমাত্র গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না, তা একপ্রকার স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে এদিনের বৈঠকে।
0 Comments