ভীমা কোরেগাঁও মামলায় অভিযুক্ত সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী গৌতম নওলাখাকে জেলে পাঠানোর আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট।

ভীমা কোরেগাঁও মামলায় অভিযুক্ত সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী গৌতম নওলাখাকে জেলে পাঠানোর আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র আর্জি নাকচ করে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, অসুস্থ গৌতমকে গৃহবন্দি রাখা হবে।


গত ১০ নভেম্বর অসুস্থতার কারণে গৌতমকে জেল থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে গৃহবন্দি রাখার অনুমতি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।

কিন্তু এনআইএ-র তরফে সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হয়। বিচারপতি কে এম জোসেফ এবং বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের বেঞ্চ সেই আর্জি খারিজ করে জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মহারাষ্ট্রের জেলে বন্দি গৌতমকে বাড়িতে পাঠাতে হবে।

শুক্রবার শুনানি-পর্বে এনআইএ-র আইনজীবীকে কার্যত ভর্ত্‍সনা করে দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, ''৭০ বছরের গৌতম নওলাখা যে গুরুতর অসুস্থ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সে প্রসঙ্গ আড়াল করার চেষ্টা করছে তদন্তকারী সংস্থা।''

কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতির সমালোচক নওলাখা গত বছর ২৫ এপ্রিল থেকে মুম্বইয়ের তালোজা জেলে বন্দি। ২০১৮ সালের ভীমা কোরেগাঁওয়ের ঘটনায় মাওবাদী-ঘনিষ্ঠ সংগঠন এলগার পরিষদকে গোপন তথ্য দিয়ে তিনি সাহায্য করেন বলে অভিযোগ ছিল। গত জুলাইয়ে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র বিশেষ আদালত।

বম্বে হাই কোর্টে সেই আবেদনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পাল্টা মামলা করেছিলেন নওলাখা। কিন্তু সেখানেও আবেদন খারিজ হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। গৌতমের অসুস্থতা নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে প্রশ্ন তোলা হলেও তা খারিজ করে গত ১০ নভেম্বর শীর্ষ আদালত বলে, ''মেডিক্যাল রিপোর্টের সত্যতা নিয়ে সংশয়ের কোনও কারণ নেই।''

গৃহবন্দি থাকাকালীন গৌতমকে তাঁর বাড়ি পাহারায় থাকা পুলিশকর্মীদের খরচ বাবদ ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে নির্দেশ দিয়েছে, বাড়িতে থাকলেও মোবাইল বা ইন্টারনেট ব্যবহারের অনুমতি পাবেন না গৌতম।

ভীমা কোরেগাঁও হিংসার মামলায় অভিযুক্ত মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের অক্টোবরে চার্জশিট জমা দিয়েছিল এনআইএ। তার মধ্যে স্টান স্বামীর জেলবন্দি অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। গৌতম ছাড়াও চার্জশিটে নাম রয়েছে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা নাগরিক আইন কর্মী আনন্দ তেলতুম্বড়ে, সমাজকর্মী গৌতম নওলাখা, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হানি বাবু, সমাজকর্মী সাগর গোর্খে, সংস্কৃতিকর্মী রমেশ গাইচোর এবং সমাজকর্মী জ্যোতি জগতপের।

Post a Comment

0 Comments