সামান্য স্কুল-নির্বাচনে হেরে গিয়েই তৃণমূল কাউন্সিলরের তাণ্ডব, ব্যালট ছিনতাই! আতঙ্কে হাউহাউ করে কেঁদে ফেললেন প্রধান শিক্ষক

সামান্য স্কুল-নির্বাচনে হেরে গিয়েই তৃণমূল কাউন্সিলরের তাণ্ডব, ব্যালট ছিনতাই! আতঙ্কে হাউহাউ করে কেঁদে ফেললেন প্রধান শিক্ষক

বিদ্যালয়ের একটি সামান্য নির্বাচনেই যদি শাসকদলের এই তাণ্ডব হয়, তবে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে কি হতে চলেছে?

সেই আতঙ্কই এখন গ্রাস করেছে বিরোধীদল থেকে সাধারণ মানুষকে। মঙ্গলবার ছিল খড়্গপুর শহরের তেলেগু বিদ্যাপীঠের পিআইই (PIE) প্রতিনিধি নির্বাচন। প্রার্থী হয়েছিলেন ২ জন। একজন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর (১৫ নং ওয়ার্ডের) বনথা মুরলী। অপরজন এলাকারই প্রাক্তন শিক্ষক এম. কালি দাস। শিক্ষক এবং অভিভাবক প্রতিনিধি মিলিয়ে ভোটার ছিলেন ১২ জন। সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক (SI)-এর উপস্থিতিতে এবং প্রধান শিক্ষকের পরিচালনায় ভোট সম্পন্ন হয় নির্বিঘ্নে। তবে, ফলাফলে হতাশ হতে হয় কাউন্সিলর বনথা-কে! ৭-৪ ব্যবধানে পরাজিত হন তিনি। আর, এই পরাজয় মেনে নিতে না পেরেই, তাঁর নির্দেশে বিদ্যালয়ে তাণ্ডব দেখান তাঁর কর্মী সমর্থকরা। এমনটাই অভিযোগ করেছেন খড়গপুর তেলেগু বিদ্যাপীঠ স্কুলের প্রধান শিক্ষক কে শ্রীরামচন্দ্র মূর্তি। শুধু তাই নয়, ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগও উঠেছে। জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খড়গপুর টাউন থানা এবং মহকুমা প্রশাসককে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক কে শ্রীরাম চন্দ্র মূর্তি ।

যদিও, এসবের পরোয়া না করে, মুরলী এই ফলাফল ভেস্তে দিয়ে পুনরায় নির্বাচনের জন্য চাপ দেন। শেষমেশ তাঁর চাপের কাছে নতিস্বীকার করে পুনরায় নির্বাচনের প্রস্তাব মেনে নেওয়াও হয়! বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে নোটিশ। যদিও, স্কুলের তরফে অভিযোগ জানিয়েছেন খড়্গপুর টাউন থানায়। অন্যদিকে, এই ঘটনার বিষয়ে বুধবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাওয়া হলে, তিনি ক্যামেরার সামনে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেন! স্বীকার করেন, তিনি আতঙ্কে আছেন। অপরদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে বনথা ফোনে আমাদের জানিয়েছেন, "আমাকে অভিভাবকরা আগেই পিআইই (PIE) প্রতিনিধি হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। স্কুল সেটা মানেনি। উল্টে নির্বাচনে কারচুপি করেছিলেন ওই প্রধানশিক্ষক মশাই। তাই, পুনরায় নির্বাচনের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।" তিনি এও বলেন, "আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে। আমি যদি গন্ডগোল করতেই চাইতাম, তাহলে তো নির্বাচনে হারতামই না! যা হোক করে জিতে যেতাম!" অন্যদিকে, ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি'র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, "আপনারাই বুঝে নিন, রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন কিরকম হবে! মুখ্যমন্ত্রী যতোই ওই সমস্ত শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বুলি আওড়ান না কেন, যাঁরা সামান্য স্কুল নির্বাচনে ব্যালট ছিনতাই করে, তাদের অভিসন্ধি বোঝাই যাচ্ছে।"যদিও পিংলার বিধায়ক তথা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটের অজিত মাইতি দিলীপ ঘোষ কি পাল্টা এইসব নিয়ে আক্রমণ করে । তবে শহর জুড়ে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের মধ্যেই তৃণমূলের কাউন্সিলরের এই আচরণে ব্যাপক খুব দেখা দিয়েছে ।

Post a Comment

0 Comments