বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের যা ছবি, তাতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল অবস্থাই সামনে আসে।

হাসপাতালের ওয়ার্ডের বেডে যত সংখ্যক রোগী ভর্তি রয়েছেন, তার থেকে অনেক বেশি রোগী শুয়ে রয়েছেন হাসপাতালের করিডরে বা শৌচালয়ের পাশে। সেখানে চিকিত্‍সকের দেখা পাওয়া যায় কালেভদ্রে। রোগীর পরিবারের লোকজনেরা ডাকলে কখনও চিকিত্‍সকেরা সেখানে গেলেও, পরিষেবা মেলেনা বললেই চলে।

বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের যা ছবি, তাতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল অবস্থাই সামনে আসে।

বাঁকুড়া জেলার সবথেকে বড় হাসপাতাল এই মেডিক্যাল কলেজ। বাঁকুড়া জেলার প্রায় সব প্রান্ত থেকে রোগীরা প্রতিনিয়ত যান সেখানে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা থেকেও বাঁকুড়ার মেডিক্যাল কলেজে আসেন অনেকে। কিন্তু সেই রোগীদের একটা বড় অংশকেই নিরাশ হতে হয় বলে অভিযোগ। রোগীর পরিবারের অনেকেই বলছেন, হাসপাতালে রোগী নিয়ে গেলে প্রথমেই রোগীর পরিজনকে শুনতে হয়, ‘বেড নেই’। রোগীকে মেঝেতে রাখতে হয় বলেও অভিযোগ।

হাসপাতালের মেল মেডিসিন ও ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডে এই সমস্যা সবথেকে বেশি। একটু চিকিত্‍সার আশায় রোগীর পরিজনেরা রোগীকে মেঝেতে রাখতেও রাজি হন অনেক সময়। কিন্তু তাতে আর এক বিপদ। রোগীর পরিজনেরা জানাচ্ছেন, মেঝেতে থাকা রোগীদের দেখেও দেখেন না চিকিত্‍সকেরা। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কখনও হাসপাতালের করিডরে, আবার কখনও শৌচালয়ের সামনে পড়ে থাকেন রোগী।

বছর দুয়েক আগে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিকাঠামোর অভাব মেটাতে তৈরি হয়েছে বিশাল সুপার স্পেশালিটি ব্লক। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই ব্লক তৈরি হলেও চিকিত্‍সক, নার্সিং কর্মী, গ্রুপ ডি কর্মীর অভাবে পূর্ণমাত্রায় চালু করা যায়নি সেটি। পরিকাঠামোর অভাব কার্যত স্বীকার করে নিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।

বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু পরিষেবার অভাব থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, পরিকাঠামোর তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি হয়ে যাওয়াতেই সমস্যা বাড়ছে। প্রয়োজনীয় পরিষেবা বাড়াতে কী করা যায়, সেটা ভাবা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। অধ্যক্ষ উল্লেখ করেন, সবথেকে বেশি চাপ রয়েছে মেডিসিন বিভাগে। চিকিত্‍সক বাড়ানো প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে তাঁর দাবি, অন্যান্য জায়গা থেকে রেফার করার জন্য এত বেশি রোগী আসছেন মেডিক্যাল কলেজে, যাতে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করে পরিষেবা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’


Post a Comment

0 Comments