বিচারপতি বলেন, 'আমি শুনলাম হাইকোর্টের কয়েকজন কর্মীকে গতকাল গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ তাদের নিম্ন আদালতে পেশ করা হবে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।'

বকেয়া ডিএ-র দাবিতে চলছে আন্দোলন (DA Protest)। গতকাল সেই আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকে গ্রেফতার হয়েছেন কয়েক জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন কিছু হাইকোর্টের কর্মীও। এই গ্রেফতারি নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার আদালতে মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)।

এদিন বিচারপতি বলেন, 'আমি শুনলাম হাইকোর্টের কয়েকজন কর্মীকে গতকাল গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ তাদের নিম্ন আদালতে পেশ করা হবে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।'

বুধবার দুপুরে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা তথা ডিএ-র (DA-Dearness Allowance) দাবিতে ধুন্ধুমার ঘটে গেছে কলকাতায়। ডিএ-র দাবিতে বিধানসভা অভিযান করছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের যৌথ মঞ্চের সদস্যরা। পুলিশ তাঁদের রানি রাসমণি অ্যাভেনিউতে আটকে দিলে তাঁরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। ফলে দু'পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। মহার্ঘভাতাকে কেন্দ্র করে অভিযানের সময় বহু সরকারি কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এঁদের মধ্যে হাইকোর্টের কর্মীরাও রয়েছেন।

গতকাল দেখা যায়, পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বেশ কিছু রাজ্য সরকারি কর্মচারী আকাশবানী তথা বিধানসভার দিকে দৌড় লাগিয়েছেন। তাঁদের পিছনে পিছনে দৌড়চ্ছে পুলিশ। শুধু রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা এদিনের আন্দোলনে ছিলেন না, সেই মিছিলেন ছিলেন পেনশনভোগীরাও। রানি রাসমণি থেকে বিধানসভার দিকে যাওয়ার সময়ে এক পেনশনভোগী মাথা ঘুরে রাস্তায় পড়েও যান।

বিড়ম্বনার বিষয় হল, যাঁরা এদিন ডিএ-র দাবিতে আন্দোলনে নামেন তাঁরা যেমন রাজ্য সরকারি কর্মচারী, তেমনই পুলিশও রাজ্য সরকারি কর্মচারী। ফলে এদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচির গোড়াতেই পুলিশ কঠোর মনোভাব দেখায়নি। কিন্তু রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা বিধানসভার গেটে পৌঁছে গেলে পুলিশ আর রেয়াত করেনি। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অভিযোগ, তাঁদের টেনেহিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়েছে। পুলিশের ধাক্কাধাক্কিতে কলকাতা হাইকোর্টের এক কর্মচারীর মুখ ফেটে রক্ত বেরিয়ে যায়।

বিধানসভার এখন শীতকালীন অধিবেশন চলছে। এদিন সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন। তার পর উল্টোদিকে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে সরকারি অনুষ্ঠানে ছিলেন মমতা। বস্তুত বিধানসভার সময় নির্বাচন করেই এদিন অভিযানে নামেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। মূল উদ্দেশ্য ছিল, এ ব্যাপারে সরকারের উপর চাপ তৈরি করা।

তবে ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকার এখনও অবস্থান বদলায়নি। কলকাতা হাইকোর্ট তিন মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটানোর যে নির্দেশ দিয়েছে তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে রাজ্য সরকার। সেই মামলার শুনানি এখনও শুরু হয়নি। এখন দেখার সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয়।

Post a Comment

0 Comments