বেশ কয়েক মাস ধরে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রয়েছে সুশান্ত। কারাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে নিয়মিত খবরের কাগজ পড়ে সে। তার মাধ্যমেই সে জানতে পেরেছে, দিল্লিতে শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের কথা। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শ্রদ্ধার প্রেমিক আফতাব। সে কথাও জেনেছে সুশান্ত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুশান্তর ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কারারক্ষী জানিয়েছেন, শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর সংশোধনাগারে অনেকেই সুশান্তকে প্রশ্ন করে, তার সঙ্গে আফতাবের কোনও মিল আছে কি না তা নিয়ে। উত্তরে আফতাবের সঙ্গে তার নিজের পার্থক্যের কথা বলেছে সুশান্ত। ওই কারারক্ষী বলেন, ''সে বলেছে, ''ওর (আফতাব পুনাওয়ালা) তো অনেক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। আমি শুধু চিনতাম সুতাপাকে।'' ওই কারারক্ষীর কথায়, ''সুশান্তর বক্তব্য, ''সুতপাকে মাত্রাতিরিক্ত ভালোবাসাই কাল হল! আমি কোনও দিন অন্য মহিলার প্রতি আসক্ত হতে পারিনি। ওকে খুব ভালবাসতাম।''
সুশান্তর আইনজীবী পীযূষ ঘোষের বক্তব্য, ''সংশোধনাগারে আগের থেকে সুশান্তর আচরণের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমাদেরকে যথেষ্ট সহযোগিতা করছে ও।''
গত ২ মে সন্ধ্যায় বহরমপুরের গোরাবাজারের শহিদ সূর্য সেন রোড দিয়ে নিজের মেসে ফিরছিলেন বহরমপুর গার্লস কলেজের প্রাণিবিদ্যার তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপা। অভিযোগ, ফেরার পথে তাঁকে অনুসরণ করে সুশান্ত। সুতপাকে তাঁর মেসের দরজার সামনে সুশান্ত এলোপাথাড়ি ছুরির কোপে খুন করে বলেও অভিযোগ। সম্প্রতি, দিল্লিতে প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুন করে তাঁর দেহ ৩৫ টুকরো করার অভিযোগ উঠেছে আফতাবের বিরুদ্ধে। এই দু'টি ঘটনা প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের প্রধান রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ''সুশান্ত এবং আফতাব মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে দু'জন ভিন্ন ধরনের মানুষ। সুতপার বাইরে সুশান্তর অন্য কোনও সম্পর্কের খবর প্রকাশ্যে আসেনি। কিন্তু, আফতাব প্রেমিকার দেহ ফ্রিজে লুকিয়ে রেখে অন্য মেয়ের সঙ্গে সময় কাটাতেন। দু'টি ঘটনাকে গুলিয়ে ফেললে হবে না।''
সুতপা হত্যা মামলায় ইতিমধ্যেই প্রথম পর্যায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে সাক্ষ্য গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। আগামী ২১ নভেম্বর আবার সুশান্তকে হাজির করানো হবে আদালতে।
0 Comments