টেটের রেজাল্টে হয়রানির শিকার প্রার্থীরা, আগেরবার ফেল এবার পাস

নেক বিক্ষোভ, আন্দোলন, মামলা-মোকদ্দমা পেরিয়ে প্রাথমিকে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামী মাসেই টেট পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু সেই নিয়োগ নিয়ে জট কাটছে না কোনওভাবেই। পরীক্ষা যত এগিয়ে আসছে, ততই সামনে আসছে চাকরি প্রার্থীদের একের পর এক অভিযোগ। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসের সামনে প্রতিনিয়ত নানা অভিযোগ নিয়ে হাজির হচ্ছেন অনেকেই।

পর্ষদ সভাপতি প্রত্যেকের সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিলেও স্বচ্ছ নিয়োগ নিয়ে সন্দেহ দূর করতে পারছেন না অনেকে। সম্প্রতি ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের প্রাপ্ত নম্বরের তালিকা প্রকাশ হয়েছে। আর তারপরই হিসেব মেলাতে গিয়ে মাথায় হাত বহু প্রার্থীর।

পাশ না ফেল?

তনুশ্রী সিংহ ২০১৪ সালে টেট দিয়েছিলেন। তখন তাঁর ফল ছিল ‘নট কোয়ালিফায়েড’ অর্থাত্‍ পাশ করতে পারেননি তিনি। আর সম্প্রতি ফল প্রকাশ হওয়ার পর তিনি দেখছেন, তালিকায় তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৯৬। অর্থাত্‍ পাশ করেছেন তিনি। আগের বার পাশ না করায় আবেদন করতে পারেননি তনুশ্রী। ৮ বছর পর তিনি জানলেন পাশ করেছেন। কিন্তু, এখন তাঁর বয়স ৪৫। তাই আর আবেদন করতে পারছেন না। তনুশ্রীর প্রশ্ন, আমার এই আট বছরে যা ক্ষতি হল, তা কে পূরণ করবে?

৮২ পেয়েও আবেদন করতে পারছেন না

সংরক্ষিত আসনের ক্ষেত্রে ৮৩ পেলে টেট উত্তীর্ণ হিসেবে গন্য করা হয়। কিন্তু, সাম্প্রতিক হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, শতাংশের হিসেব মেলাতে সংরক্ষিত আসনের ক্ষেত্রে ৮২ নম্বর পেলেই পাশ করবেন প্রার্থী। কিন্তু, জয়শ্রী গড়াই নামে এক প্রার্থী জানাচ্ছেন, তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৮২, তিনি সংরক্ষিত আসনের জন্য আবেদন করবেন। কিন্তু অনলাইনে আবেদন করতে গেলেই পেজ ব্ল্যাঙ্ক দেখাচ্ছে।

এক্ষেত্রে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালের দাবি, সংরক্ষিত আসনের জন্য পোর্টাল এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। সোমবার রাত পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে। তারপর আবেদন করতে আর কোনও অসুবিধা থাকবে না বলেই জানিয়েছেন তিনি।

৯৬ কমে হল ৮৩

প্রার্থীর নাম অরূপ কুমার। ২০১৪ সালে টেট দেওয়ার পর তাঁর ২০১৬ সালে ইন্টারভিউয়ের ডাক পেয়েছিলেন তিনি। এবার ফল প্রকাশের পর দেখছেন, তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৮৩। তাঁর নাম দেখা যাচ্ছে সংরক্ষিত ক্যাটাগরিতে, অথচ তিনি একজন জেনারেল ক্যাটাগরির প্রার্থী। অরূপ বলছেন, জেনারেল ক্যাটাগরির প্রার্থী হিসেবে ৯০ না পেলে পাশ করা যায় না, তাহলে ৮৩ পেয়ে আগের বার কীভাবে ডাক পেলেন তিনি? আর এবার সংরক্ষিত আসনে কেনই বা আবেদন করবেন তিনি?

পর্ষদ সভাপতির দাবি, অনেকে ভুল করে সংরক্ষিত হিসেবে আবেদন করেছিলেন। এ এ ক্ষেত্রেও তেমনটা হয়ে থাকতে পারে। ভুলটা প্রার্থীর নাকি পর্ষদের, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে জট যে সরল অঙ্কে কাটছে না, তা বেশ স্পষ্ট।

Post a Comment

0 Comments