মানুষের গায়ে আজকাল বড়ই শকুন শকুন গন্ধ পাই।

না, এ কেবল সোশ্যাল মিডিয়ার সুফল-কুফল আলোচনার প্রসঙ্গ নয়। নেটপাড়ায় একের পর এক যে ধরণের পোস্ট সকলের নজর কেড়েছে ঐন্দ্রিলা শর্মাকে কেন্দ্র করে তা তো তালিকায় রইলই, উল্টে শুভাকাঙ্খীর নামে যাঁরা মৃত্যু সংবাদের ভুয়ো তথ্য শুনে ছুটেছিলেন তাঁদেরও এবার কড়া বার্তা দিলেন সব্যসাচী। এক অমানসিক যন্ত্রনা দিয়ে যখন যাচ্ছিলেন সব্যসাচী চৌধুরী, ঐন্দ্রিলার পরিবার, তখন বাইরের যে কুত্‍সিত, কদর্য্য ছবি তাঁর চোখের সামনে উঠে আসে, তা নিয়ে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক দীর্ঘ বার্তা দিলেন।

না, ঠিক নিজের হয়ে মুখ খোলা নয়, এহেন পরিস্থিতি দিয়ে ঠিক যে বা যাঁরা যাচ্ছেন, বা গিয়েছেন, তাঁদের পক্ষেও মুখ খুললেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় মোট চারটি পয়েন্ট ধরে-ধরে নেটিজ়েনদের কাছে স্পষ্ট করে দিলেন।

এদিন সব্যসাচী ঐন্দ্রিলা শর্মার শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটার খবরের পাশাপাশি লিখলেন- ‘কিছু কথা বলা প্রয়োজন। প্রথমত, এ কথা ঠিক যে ঐন্দ্রিলার প্রথম থেকে যা-যা হয়েছে তা যথেষ্টই অপ্রাকৃত। কিন্তু তা বলে সেটা নিয়ে এত মাতামাতি করলে তা বাকি পেশেন্টদের একপ্রকার অপমান করা হয় বলে আমি মনে করি। দ্বিতীয়ত, চিকিত্‍সার খরচ নিয়ে লেখালিখি বন্ধ করা উচিত, পরিবারের সামর্থ্য অনুযায়ীই চিকিত্‍সা হবে, এখনো অবধি কারোর কাছে এক পয়সাও অর্থসাহায্য চাওয়া হয়নি অথবা কারোর থেকে এক পয়সাও গ্রহণ করা হয়নি। তাই এটা নিয়ে লেখা মানে ঐন্দ্রিলাকে অপমান করা এবং তার পরিবারকে ছোট করা। নিজের অপমান গায়ে মাখি না ঠিকই কিন্তু ওর অপমানে আমার গায়ে ফোস্কা পড়ে।

তৃতীয়ত, একটা সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ চেষ্টা করে তার কাছের মানুষের পাশে থাকতে, বিপদে পড়লে খড়কুটো অবধি আঁকড়ে ধরতে। সেটাই তো এতদিন স্বাভাবিক বলে জেনে এসেছি। আমার মা অসুস্থ হলে, বাবা যেমন দৌড়াদৌড়ি করেন, গত দুই বছর ধরে আমিও সেটাই করেছি। তাই কিছু পুরোনো ছবি আর ভিডিও সাজিয়ে, গান বাজিয়ে সেটাকে গ্লোরিফাই করা বন্ধ করা উচিত। এমন কি একটা লকডাউনের সময়কার তারাপীঠের ভিডিও পর্যন্ত ঐন্দ্রিলার নাম করে ঘুরপাক খাচ্ছে দেখলাম। আমি ঠিক জানি না, এগুলো করে বোধহয় তোমাদের চ্যানেল বা পেজ পয়সা পায় কিন্তু বিষয়টা আমার চোখে খুবই দৃষ্টিকটু লাগে। ইহ জীবনে কয়েক শত জুটিকে দেখেছি এসএসকেএম'এর বাইরের ফুটপাথে রাত কাটাতে, ভালোবাসে বলেই তারা থাকে। তবু পরিচিত মুখ বলে আমরা চর্চিত হই, তারা নয়। আসলে কি জানো, সে খবর বিক্রি হয় না।

সর্বশেষে বলি, মানুষের গায়ে আজকাল বড়ই শকুন শকুন গন্ধ পাই। গত দুইদিন ধরে হাসপাতালের নিচে বেশ ভিড় জমেছিলো, ওর অবস্থার উন্নতি ঘটাতে কাল রাত থেকে একেবারে খাঁ খাঁ করছে। তবে গত দুদিনের এত নেগেটিভিটির মাঝে একটামাত্র মানুষ আমায় কিছু তথ্য দিয়ে প্রথম আলোর দিশা দেখায়, যার সাথে সারাদিন নির্দ্বিধায় চিকিত্‍সা নিয়ে আলোচনা করি, তিনি অরিজিত্‍ সিং। ঐন্দ্রিলা আছে। ঐন্দ্রিলা থাকবে। রাখে বড়মা, তো মারে কোন..’

Post a Comment

0 Comments