মেশিনগানে পাক সেনা খতমের রিয়েল নায়ক সুজন সখীর "ফারুক" না ফেরার দেশে

মেশিনগান নিয়ে পাক সেনা খতমে অকুতোভয়, আবার সিনেমার পর্দায় রোমান্টিক নায়ক এমনই ব্যক্তিত্ব ফারুক (Farooque) প্রয়াত। পথ হাঁটা শেষ সুজনের। সখী আগেই হাঁটা শেষ করেছে। গানে বাংলা ভুবনে ঝড় তুলে দেওয়া 'সুজন-সখী' চলচ্চিত্রের চরম সফল আলোচিত নায়কের প্রয়াণে বাংলাদেশ শোকস্তব্ধ।

ঢাকাইয়া ছবির ফারুক ও কবরী সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ জনজীবনে ছিলেন আলোচিত। সেটা সত্তর দশক। তখন মুক্তি সংগ্রামে নেমেছিলেন বাংলাদেশি গেরিলারা। অভিনেতা ফারুকের হাতে উঠেছিল মেশিনগান। আর অভিনেত্রী কবরী ছিলেন গণআন্দোলনের রাজপথে। দুই জুটি ওপার বাংলার 'উত্তম-সুচিত্রা' বললেও অত্যুক্তি হবেনা।

রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া বাংলাদেশ থেকে ভেসে এসেছিল নদীর জল মেশানো সবুজ করুণ বাংলার গান "সব সখীরে পার করিতে নেব আনা আনা, তোমার বেলায় নেব সখী.."। এই গান বাংলাদেশ ছাড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গে তীব্র আলোড়ন ফেলে দেয়। সেই শুরু সুজন-সখী ক্যারিশ্মা। দশকের পর দশক বিভিন্ন সময়ে দুই বাংলায় সুজন-সখী উঁকি দিয়ে গিয়েছে গ্রামীণ বাংলার জনজীবনে। তবে ফারুক-কবরী চিরকালীন সুজন সখী। বাংলাদেশের এমনই জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও নায়িকা ফারুক-কবরী এখন অতীত।

আকবর হোসেন পাঠান ফারুক প্রয়াত। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। দুই বছর ধরে সিঙ্গাপুরে চিকিত্‍সাধীন ছিলেন তিনি।

১৯৪৮ সালের ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। ১৯৭১ সালে প্রথম সিনেমায় আসেন। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন কবরী। শুরু হয় এক অনবদ্য সফল জুটির জয়যাত্রা।

ফারুক স্কুল জীবন থেকেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। পরে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য হন।পাঁচ দশকের বেশি সময়ের অভিনয় কেরিয়ারে অভিনয় করেন বহু দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্রে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।

Post a Comment

0 Comments