এপিএআই প্রাক-কাউন্সেলিং ফেয়ার ২০২৩ শুরু হলো নেতাজি ইনডোরে


ওয়েব ডেস্ক; কলকাতা, ৩০শে জুন : অ্যাসোসিয়েশন অফ প্রফেশনাল একাডেমিক ইনস্টিটিউশন 'এপিএআই, (পশ্চিমবঙ্গ) দ্বারা আয়োজিত ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কারিগরি শিক্ষার জন্য,  প্রি-কাউন্সেলিং ফেয়ার ২০২৩' শুক্রবার ৩০শে জুন  কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে শুরু হল। তিন দিন চলবে এই ফেয়ার।  উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের নগর উন্নয়ন ও পৌর বিষয়ক মন্ত্রী এবং কলকাতা পুরসভার মেয়র  ফিরহাদ হাকিম, সাংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ও কৃষি মন্ত্রী  শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গ স্টেট কাউন্সিল অফ টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল এডুকেশনের চেয়ারপার্সন পূর্ণেন্দু বসু, বিওপিটি-র সহকারী পরিচালক অরুণাভ চক্রবর্তী, ডাব্লিউবিজেইইবি-র চেয়ারম্যান ডঃ মলয়েন্দু সাহা, ডাব্লিউবিজেইইবি-র ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক সোনালি চক্রবর্তী ব্যানার্জি, এপিএআই-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি তারানজিৎ সিং এবং এপিএআই-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার কোষাধ্যক্ষ অলক তিব্রেওয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

কর্মজীবনের উন্নয়ন এবং শিক্ষার সুযোগ প্রদানের জন্য আয়োজিত 'এপিএআই, প্রি-কাউন্সেলিং ফেয়ার ২০২৩' শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের পথ আরো সহজ করে তুলেছে, যা তাদের সাফল্য অর্জন করতে সাহায্য করবে। পশ্চিমবঙ্গের মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি এবং ডাব্লিউবিজেইইবি এই উদ্যোগটি নিয়েছে এই শিক্ষা মেলা বহু  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, বিভিন্ন ক্ষেত্রের পেশাজীবী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ইন্ডাস্ট্রি বিশেষজ্ঞদের একত্রিত করতে সাহায্য করে। এই শিক্ষা মেলাটি  শিক্ষার্থীদের কোরিয়ার এবং শিক্ষার পথে নতুন দিশা দেখাতে সাহায্য করবে । শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা, ভর্তির পদ্ধতি, পাঠ্যক্রম  এবং স্কলারশিপের সুযোগের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।

মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "আমরা যখন ছিলাম সেই সময়ও জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা হতো এবং সেই পরীক্ষার ফলাফলে অল্প কয়েকজনের নাম লিস্টে থাকতো। আমাদের কাছে অন্য অপশন ছিল না এর জন্য একটি বিষয় পড়তে আমরা সবাই কলেজে দৌড়াতাম। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনেক অপশন তৈরি হয়েছে। ধন্যবাদ জানাই প্রাইভেট সেক্টর,  জয়েন্ট এন্ট্রান্স কাউন্সিল কে যে তারা সবার জন্য নতুন দিশা তৈরি করে দিয়েছে। এবং তার সাথে অর্গানাইজড সেক্টর হওয়ার দরুন একটা লক্ষ্য তৈরি হয়েছে। আমি ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের অনুরোধ করছি যে তারা এই প্রি কাউন্সিলিং এ এসে আগামী দিনে তাদের কোন বিষয় নিয়ে পড়া উচিত সেই বিষয়টি দেখে নিতে। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর জীবনে কাউন্সিলিং দরকার। এখন অনেক ধরনের বিষয় রয়েছে ফলে একটি বিষয়ের পেছনে দৌড়ে লাভ নেই। এখন পশ্চিমবঙ্গে অনেক সুযোগ তৈরি হয়েছে। সিলিকন ভ্যালি তৈরি হচ্ছে। ডেটা হাব তৈরী হচ্ছে।  এছাড়া টিসিএস এখানে এমন একটি ক্যাম্পাস নিয়েছে যেখানে ৫০ হাজার মানুষ একসঙ্গে কাজ করতে পারে। আমি সবাইকে একটা কথাই বলব যে লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে চলো।" 

মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, " আপাই (APAI) কে ধন্যবাদ যে তারা ছাত্র ছাত্রীদের আগামী দিনে কিভাবে এগিয়ে যাবে তার জন্য এই ধরনের এক প্রি কাউন্সিলিং এর আয়োজন করেছে। যাদের জন্য এই ব্যবস্থা সেই ছাত্র-ছাত্রীরা এখান থেকে ভালো সুযোগ পাবেন এবং আগামী দিনে তাদের পথ চলতে সুবিধা হবে এই আশা করছি।"

ডাব্লিউবিজেইইবি-র চেয়ারম্যান, ড. মলয়েন্দু সাহা বলেন, " এ বছরের জয়েন্ট এন্ট্রান্সে তাই ১ লক্ষ ২৪ হাজার ছাত্র ছাত্রী রেজিস্টার করেছিলেন, তার মধ্যে এক লক্ষ এক হাজার ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসেছিলেন, সেখানে ৯৭ হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী Rank করেছে। আমরা এখন এই অ্যালটমেন্ট বা ই কাউনসেলিং প্রসেস আয়োজন করি। এখন সবার মনে প্রশ্ন যে এই কাউন্সিলিং বা এই অ্যালটমেন্ট কবে থেকে হবে। কাউন্সিলিং করার জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের তরফ থেকে যে কার্যপ্রণালী সেটি সম্পূর্ণ। যে কোনো সময়ে যদি আমরা ডিরেক্টর অফ টেকনিক্যাল এডুকেশন হাইয়ার এডুকেশন এর তরফ থেকে সিট ম্যাপ পাই তাহলে তার পাঁচ দিনের মধ্যেই আমরা কাউন্সিলিং করতে পারি। এআইসিটিই  তাদের কাউন্সিলিংয়ের সর্বশেষ তথ্য ৩০জুন দেবে। এরপর ম্যাকাউট তার কিছু প্রণালী করার পর সেই তথ্য পাঠিয়ে দেবে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের ডাইরেক্টর অফ টেকনিক্যাল এডুকেশনকে । ডাইরেক্টর অফ টেকনিক্যাল এডুকেশন তার মধ্যে কিছু কাজ করে সেখান থেকে সেই সিট ম্যাট্রিক্স আমাদের পাঠাবে এবং তারপর আমরা পাঁচ দিনের মধ্যে আমরা কাউন্সেলিং শুরু করতে পারব। প্রতিবছরই স্টুডেন্টদের স্বার্থে আমরা কাউন্সিলিং এর কিছু নতুন নতুন জিনিস নিয়ে আসি। এই বছরও কাউন্সেলিং তিনটি রাউন্ডে হবে। এ বছরে চয়েস ফিলিং এবং চয়েস লকিং এর মাঝে একটা সময় আমরা দেব যেখানে তারা মক অ্যালোটমেন্ট দেখতে পারবে ।  তারা দেখতে পারবে যে কোথায় তার সিট হচ্ছে তার একটি মক অ্যালটমেন্ট দেখাতে পারব। সেক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রী যদি পছন্দ মতন সাবজেক্ট না পান সেক্ষেত্রে তারা একটু মডিফাই করতে পারবেন, সেটা প্রথম রাউন্ডে। তারপরেই সে চয়েজ লক করতে পারবে। এতে ছাত্রছাত্রীরা ভীষণভাবে উপকৃত হবে।“

পশ্চিমবঙ্গের এপিএআই -এর  প্রেসিডেন্ট তারানজিৎ সিং বলেছেন  "আমরা এপিএআই প্রি-কাউন্সেলিং ফেয়ার ২০২৩-এর উদ্বোধন করতে পেরে আনন্দিত, যা ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের আরো উৎসাহিত করতে সাহায্য করবে।  এই এডুকেশন ফেয়ার -এর মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের সু-উজ্জল অভিজ্ঞতা প্রদান করার চেষ্টা করি। শিক্ষার্থীদের খ্যাতি সম্পুন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত করতে এবং বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করার সুযোগ প্রদান করি।"

পশ্চিমবঙ্গের এপিএআই -এর  জেনারেল সেক্রেটারি সত্যম রায়চৌধুরী এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন  "এপিএআই প্রি-কাউন্সেলিং ফেয়ার  পশ্চিমবঙ্গের  শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যতিক্রমী শিক্ষার সুযোগ প্রদান করে। আমাদের লক্ষ্য হল  শিক্ষার্থীদের  শিক্ষাগত জীবন সম্পর্কে ঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। আমরা এই শিক্ষা মেলাকে এমন একটি জায়গায় গড়ে তোলার চেষ্টা করছি যেখানে শিক্ষার্থীরা সব ধরণের সুযোগ পায়ে এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তির সম্পর্কে ধারণা হয়।"

Post a Comment

0 Comments