ওয়েব ডেস্ক; ১১ সেপ্টেম্বর: আদানি উইলমার লিমিটেড (AWL) জানাচ্ছে যে অপুষ্টি ও রক্তাল্পতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার পোষণ মাহ (পুষ্টি মাস)-তে ফরচুন সুপোষণ প্রোজেক্ট অসাধারণ সাফল্য লাভ করেছে। পুষ্টি মাস শুরু হয়েছে চলতি সপ্তাহেই। ২০১৬ সালে শুরু হওয়া এই প্রোজেক্টে চোখে পড়ার মত অগ্রগতি হয়েছে এবং ৫ বছরের কম বয়সের শিশু, মা হওয়ার বয়সে পৌঁছনো মহিলা, বয়ঃসন্ধিকালীন মেয়েদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সংক্রান্ত অবস্থার উন্নতিতে উৎসাহব্যঞ্জক ফল দিয়েছে। ফলে ভারতের ছটি জায়গায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মানুষ লাভবান হয়েছেন। এর মধ্যে আছে বুন্দি (রাজস্থান), গোড্ডা (ঝাড়খণ্ড), রায়গড় (ছত্তিসগড়), ধামরা (ওড়িশা), হলদিয়া (পশ্চিমবঙ্গ) এবং থারাদ (গুজরাট)।
নতুন দিল্লির বেসরকারি গবেষণা সংস্থা আয়োটালিটিক্স রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্স প্রাইভেট লিমিটেডের করা এন্ডলাইন মূল্যায়ন থেকে উপরে উল্লিখিত ছটি জায়গায় ফরচুন সুপোষণ প্রোজেক্টের হস্তক্ষেপের সন্তোষজনক প্রভাব এবং এই প্রোজেক্টের ফলে ৫ বছরের কম বয়সের শিশুদের অপুষ্টির মোকাবিলায় যে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে তা ধরা পড়েছে।
এই সমীক্ষার ফল ছটি জায়গা জুড়ে মোট ৪১৫,৬৯৪ জন মানুষের অপুষ্টির সঙ্গে লড়াইয়ে এই প্রোজেক্টটির সাফল্য তুলে ধরেছে। এতে ৩১৫টি গ্রামের মূল্যায়নের ফলাফল তুলে ধরা হয়েছে। এই কাজে যুক্ত ছিলেন ৫৮২ জন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, যাঁদের সাহায্য করেছেন ১৯০ জন সঙ্গিনী। এঁরা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মহিলা স্বেচ্ছাসেবক। এই ফলাফল সমাজের ভাল থাকায় উল্লেখযোগ্য উন্নতির সাক্ষ্য দিচ্ছে। ২৬,২০৪ জন শিশু; ৭০,৬২০ জন মহিলা এবং ২৬,৩০৬ জন বয়ঃসন্ধির মেয়ে সাহায্য পেয়েছে এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে। এই উদ্যোগ ৭৭,৩২৬টি পরিবারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই উৎসাহব্যঞ্জক ফলগুলি অপুষ্টির মোকাবিলায় এবং আমাদের সমাজের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সুনির্দিষ্ট হস্তক্ষেপ এবং যৌথ প্রয়াসের কার্যকারিতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
এই মূল্যায়নে প্রোজেক্টের প্রভাব মাপা হয়েছে। তাতে ২০১৫-১৬ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত অপুষ্টির তিনটি প্রধান সূচকের উল্লেখযোগ্য নিম্নগামিতা উদ্ঘাটিত হয়েছে: প্রোজেক্টের ছটি জায়গাতেই ৫ বছরের কম বয়সের শিশুদের মধ্যে খর্বতা (বয়স অনুযায়ী উচ্চতার সাপেক্ষে), ওজনের তুলনায় কম উচ্চতা এবং কম ওজন (বয়সের তুলনায়)। মূল্যায়নের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে ওজন কম হওয়ার দৃষ্টান্ত ২০১৫-১৬ সালের ৪০.৬% থেকে কমে ২৫.৬% হয়ে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে খর্বতা দৃষ্টান্ত ৪১.৫% থেকে ২৮.৬% হয়েছে, ওজনের তুলনায় কম উচ্চতার দৃষ্টান্ত ২৩.৩% থেকে ১৫.১% হয়েছে। এই ফলাফল ভারতে অপুষ্টি এবং শিশুদের মধ্যে ওজনের তুলনায় কম উচ্চতার হার পৃথিবীর সর্বোচ্চ হওয়ার মত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর মোকাবিলায় এই প্রোজেক্টের কার্যকারিতা প্রমাণ করে। মনে রাখতে হবে, ভারত গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স ২০২২-এ ১২১টি দেশের মধ্যে ১০৭ নম্বরে আছে, ফলে “সিরিয়াস” বিভাগের মধ্যে পড়ে গেছে। আদানি উইলমারের ফরচুন সুপোষণ প্রোজেক্ট লঞ্চ করা হয়েছিল প্রমাণভিত্তিক, প্রযুক্তিচালিত এবং জনগোষ্ঠীকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আদানি ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যৌথভাবে। এর উদ্দেশ্য ছিল প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসা অপুষ্টির চক্র ভাঙা।
নতুন জায়গায় এই প্রোজেক্ট লঞ্চ করা সম্পর্কে ডঃ প্রীতি আদানি, চেয়ারপার্সন, আদানি ফাউন্ডেশন বলেন, “ফরচুন সুপোষণ প্রোজেক্টের দ্বিতীয় পর্যায়ে (২০১৮-২৩) গুজরাট, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিসগড় এবং ওড়িশার ছটা সাইটের এন্ড-লাইন মূল্যায়ন প্রকাশ করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। এই প্রোজেক্ট তথ্যের সুলভতার ক্ষেত্রে যে খামতি ছিল তা দূর করে আরও অবগত, উদ্বুদ্ধ এবং একে অপরের সঙ্গে যুক্ত জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় নিয়েছে। সাইট টিমগুলো যে প্রয়াস চালিয়েছে আমি তার প্রশংসা করি। বিশেষ করে আমাদের সুপোষণ সঙ্গিনীরা ১০০০ দিনের জীবনচক্রের গুরুত্ব প্রচার করতে এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসা অপুষ্টির চক্র ভাঙতে যে ভূমিকায় নিয়েছেন তা প্রশংসাযোগ্য।”
অংশু মালিক, ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, আদানি উইলমার লিমিটেড, বললেন “‘স্বাস্থ্যবান বেড়ে চলা দেশ’ গড়ে তোলার যে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য আদানি উইলমারের আছে ফরচুন সুপোষণ প্রোজেক্ট তারই নিদর্শন। আমরা প্রত্যেক ভারতীয়ের জীবনকে স্পর্শ করতে উদগ্রীব। তাঁদের ভরপুর জীবন উপভোগ করার শক্তি দিতে চাই, যাতে ভারত আরও শক্তিশালী, আরও স্বাস্থ্যবান এবং আরও উৎপাদনশীল হয়। আমি আনন্দিত যে এই মূল্যায়ন রিপোর্ট থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কিছু জরুরি তথ্য উঠে এসেছে যা আমাদের ভবিষ্যতে অপুষ্টি এবং রক্তাল্পতার মত ইস্যুগুলোর আরও ভালভাবে মোকাবিলা করতে শুধু উদ্বুদ্ধ করবে না, মোকাবিলার পথও তৈরি করেছে।”
0 Comments