ওয়েব ডেস্ক; ২০ ডিসেম্বর : সুস্থায়ী কৃষি এবং ক্ষমতায়নের একটি যুগান্তকারী উদ্যোগে, পুরুলিয়ার প্রথম মিলেট ক্যাফেটি হুরা ব্লক অফিসে উদ্বোধন করা হয়েছে । পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য গ্রামীণ জীবিকা মিশনের (ডব্লিউবিএসআরএলএম) আনন্দধারা প্রকল্পের অধীনে পরিচালিত পল্লী সেবিকা মহিলা সমিতি স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে ,এই মিলেট ক্যাফেটি সুইচঅন ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ,যারা এই স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীগুলির সাথে কাজ করছে। এই উদ্যোগটি শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসম্মত খাবার প্রচারের সাথে সম্পর্কিত নয় বরং সুস্থায়ী কৃষি ব্যাবস্থার বৃহত্তর লক্ষ্য পূরণের একটি মাধ্যম হিসেবেও কাজ করবে এবং দেশীয় ফসলের চাষ বাড়াতে সাহায্য করবে |
এই অনুষ্ঠানে, ব্লকের সভাপতি, সহ:সভাপতি, স্থানীয় নেতা এছাড়া সরকারি কর্মকর্তারা যেমন ,শ্রী আরিকুল ইসলাম, ডব্লিউবিসিএস(এক্সসিকিউটিভ) - বিডিও হুরা ব্লকের ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
সুইচঅন ফাউন্ডেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিনয় জাজু বলেছেন, “প্রথম মিলেট ক্যাফে দেখতে পেরে আমি গর্বিত বোধ করছি , যেটি সম্পূর্ণরূপে আমাদের স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর দিদিদের দ্বারা পরিচালিত ৷ এই প্রচেষ্টা , আমাদের মধ্যে মিলেট -ভিত্তিক খাদ্য গ্রহণকে উৎসাহিত করবে।” তিনি আরও বলেছেন, “আমি আমাদের রাজ্যে মিলেট প্রচারের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে অশেষ ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমাদের স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর দিদিদের নেতৃত্বে এই মিলেট ক্যাফে শুধুমাত্র পুষ্টিকর খাবারই পরিবেশন করবে না বরং পরিবেশের স্থায়িত্ব রক্ষার জন্য গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করবে । আমাদের লক্ষ্য , মিলেটের বাজারকে আরো জনপ্রিয় করা এবং স্থানীয় ও বিশ্বব্যাপী খাদ্য ব্যবস্থার একটি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে মিলেটকে সর্ব সম্মুখে নিয়ে আসা।”
এই ক্যান্টিনটি স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত ,যারা সুইচঅন ফাউন্ডেশন দ্বারা প্রশিক্ষিত মাস্টার ট্রেইনার। এরা সুইচঅন ফাউন্ডেশন এর বিভিন্ন অনুষ্ঠান, কর্মশালা, রান্নার প্রতিযোগিতা, খাদ্য মেলা ইত্যাদিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। নিজেদের কাজের ব্যাপারে দিদিরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ।পুরুলিয়ার ডিআরডিসি অফিসে মিলেট সম্পর্কিত একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল,সেখানে বিভিন্ন বিভাগের সরকারি আধিকারিকরা মিলেটের নানান খাবারের স্বাদ গ্রহণ করেছিলেন এবং তারা খুব পছন্দ করেছিলেন। এইভাবে হুরা ব্লক অফিসের ক্যান্টিনে, একটি মিলেট ক্যাফে স্থাপন করার ধারণাটি এসেছিল। যেখানে মিলেট জাত বিভিন্ন খাবার যেমন লাড্ডু, মালপোয়া ,পায়েস ,খিচুড়ি ইত্যাদি পরিবেশন করার কথা বলা হয়েছে | এই ক্যাফেটি শুধুমাত্র একটি রন্ধনসম্পর্কীয় কেন্দ্র হিসেবেই কাজ করবে না বরং স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর দিদিদের প্রতিষ্ঠিত হওয়া ও আর্থিক উন্নয়নের একটি মাধ্যম হিসেবেও কাজ করবে |
আরিকুল ইসলাম,ডব্লিউবিসিএস (এক্সসিকিউটিভ)- বিডিও ,হুরা বলেছেন, “আমরা আমাদের ব্লক অফিসে মিলেট ক্যাফে পেয়ে খুব আনন্দিত , যেটি স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা উদ্যোক্তাদের দ্বারা পরিচালিত ৷ আমি পল্লী সেবিকা মহিলা সমিতি স্ব-নির্ভর গোষ্ঠী এবং সুইচঅন ফাউন্ডেশনকে তাদের প্রচেষ্টার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। মিলেট অত্যন্ত পুষ্টিকর, তবে এটি এখনও মূলধারায় আসতে পারেনি । এই গুরুত্বপূর্ণ শস্যটিকে প্রচার করার জন্য একটি মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন। মিলেটকে আমাদের খাদ্যতালিকায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার জন্য আমি স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের এবং সুইচঅন ফাউন্ডেশনকে অভিনন্দন জানাই।”
স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর দিদিদের একজন, দীপালি মাহাতো বলেছেন, “আমার মিলেটের লাডডু, ক্ষীর,মালপোয়া ,খিচুড়ি এবং আরও বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করতে এবং পরিবেশন করতে খুব ভালো লাগে । আমি ডব্লিউবিএসআরএলএম এর অধিনস্ত আনন্দধারা প্রকল্প এবং সুইচঅন ফাউন্ডেশনেকে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এবং আমাদের দক্ষতা প্রদর্শনের এই সুযোগ দেওয়ার জন্য।”
0 Comments