এগারো জন বাঙালি গায়ক - গীতিকারের যৌথ প্রচেষ্টায় 'গাইব শুধু গান' উপহার দিল এক অসাধারণ সঙ্গীত সন্ধ্যার



ওয়েব ডেস্ক; কলকাতা, ৬ ডিসেম্বর : এক দুরন্ত মিউজিক্যাল প্রয়াসে, একসাথে ১১ জন উঠতি এবং স্বনামধন্য বাঙালি গায়ক - গীতিকার এবং সুরকারেরা তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে পাঁচ ঘণ্টার অনবদ্য পারফরম্যান্স উপহার দিলেন যা একদিক থেকে যেমন যুগান্তকারী আর তেমনই জীবনের সাথে বাস্তবের মেলবন্ধনের দিকটি তুলে ধরল। ' গাইব শুধু গান ', এই অনবদ্য প্রয়াসের মূলমন্ত্র ছিল বাংলা ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিউজিকের বদলে দেওয়ার ক্ষমতা, যা মানুষের সমস্ত আবেগের বিচ্ছুরণ এবং মানবতার মিশেলে এক অদ্ভুত ককটেল। এই প্রজেক্ট একাধারে যেমন মানুষের সমস্ত আবেগের সাথে মিলে মিশে গেল, তেমন জীবনের জলছবি এঁকে দিল সুরের মূর্চ্ছনা। প্রতিটি শিল্পীর নিজস্ব ঘরানার স্টাইল এবং স্বকীয় প্রভাব আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছিল, যা দর্শকদের ক্ষেত্রে এক অভাবনীয় পারফরম্যান্স তুলে ধরেছিল। এদিন হল ভর্তি লোকের মধ্যে এগারো জন গায়ক - গীতিকাররা পারফর্ম করলেন যাদবপুর ইউনিভার্সিটির ত্রিগুনা সেন অডিটোরিয়ামে। 
এক্ষেত্রে বলে রাখা দরকার যে এগারো জন পারফর্মার শুধু মাত্র গান বা সুর তৈরি করেন না, তার সাথে নিজেদের কাজ নিজেরাই প্রযোজনা করেন এবং মানুষের কাছে তুলে ধরেন। এই ধরনের কাজ বারবার প্রমাণ করে চলেছে তাদের স্বকীয়তা এবং সৃজনশীল স্বাধীনতা। বলাই বাহুল্য, ওনারা হচ্ছেন সেই প্রজন্মের যারা নিজেদের গল্প বলতে বা লড়াইয়ের কথা বলতে বা সাফল্যের অভিজ্ঞতা জানাতে পিছপা হন না। তাদের সামাজিক প্রভাবিত গানের কথা হোক বা সুর, তাদের সৃষ্টিতে বারবার উঠে আসে নিপাটভাবে জীবনের জটিল দিক এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য অঙ্গীকার। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট লেবেল এই শিল্পীদের মাধ্যম হয়ে উঠেছে যা সাধারণ মানুষদের সাথে সহজে মিশতে দেয়, এবং তাদের কাজ সমাজের বৃহত্তর স্তরে পৌঁছে অনেক প্রশংসা এনে দেয়।
অভিষেক চক্রবর্তী, যিনি নিজে একজন নামী গায়ক - গীতিকার এবং পুরো গ্রুপ চালনা করছেন তার 'গাইব শুধু গান' স্বপ্নপূরনের জন্য এই প্রজেক্ট নিয়ে নিজের ভাবনা জানান," মিউজিক বা সুরের অসম্ভব ক্ষমতা রয়েছে মানুষকে যুক্ত করার ক্ষেত্রে। শুধু তাই নয়, সুরের কাছে কাঁটাতারের ভেদাভেদ মুছে যায় আর এমনই এক আবেগ যা শব্দে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ' গাইব শুধু গান ' এমনই এক ভালোবাসার পরিশ্রমের ফল যেখানে এগারো জন, অর্থাৎ এগারোটি গলা একসাথে এমন সুরের মূর্চ্ছনা তৈরি করেছে, যা জীবনের বিভিন্ন আঙ্গিক তুলে ধরেছে। প্রতিটি শিল্পী তাদের সেরাটা দিয়েছেন, এবং পাঁচ ঘণ্টার এই অনুষ্ঠান সত্যি অনবদ্য। আমি খুব গর্বিত এরকম প্রচেষ্টার অঙ্গ হতে পেতে। আমি বিশ্বাস রাখি উপস্থিত দর্শক আমাদের প্যাশন এবং সৃজনশীলতাকে কুর্নিশ জানাবেন। আমরা হাওয়া বদলের গান দিয়ে এই যাত্রা শুরু করেছিলাম। আজকের কনসার্ট আর একবার প্রমাণ করে দেওয়া যে বাংলায় স্বাধীনভাবে সুর বা মিউজিক বানানো ছিল, আছে ও থাকবে। আমি ইন্ডাস্ট্রির প্রতিটি দিকপাল মিউজিশিয়ানদের অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাই যারা আমাদের সাহায্য করেছেন, আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিশ্বাস রেখেছেন। বলাই বাহুল্য, আগামী প্রজন্মের জন্য এটি একটি মাপকাঠি হয়ে থাকল। "
      
মিউজিশিয়ানদের মধ্যে এক অপরূপ বন্ধন রয়েছে। একে অন্যের প্রতি একদিকে যেমন বোঝাপড়া রয়েছে তেমন রয়েছে শ্রদ্ধা ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য। বলাই বাহুল্য, এই পরিবেশের খুব প্রয়োজন রয়েছে যা সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে সাহায্য করে এবং স্বাধীন ভাবে যেই শিল্পীরা কাজ করে চলেছেন, তাদের কাজ তুলে ধরে। এই মহান কাজের সাথে যুক্ত রয়েছেন বিভিন্ন শিল্পী, গায়ক, সুরকার, গীতিকার যেমন রুপম ইসলাম, সুরজিৎ চ্যাটার্জি, শিলাজিৎ মজুমদার, উপল সেনগুপ্ত, অনিন্দ্য চ্যাটার্জি, গৌরব চ্যাটার্জি ( গাবু), অনুপম রায়, কৌশিক চক্রবর্তী, রূপঙ্কর বাগচী, সৃজিত মুখার্জি, কুশল চক্রবর্তী, তিমির বিশ্বাস, এবং প্রীতম দাস । তারা বিভিন্ন ভাবে এই প্রয়াসের পিছনে রয়েছেন এবং ভিডিও ম্যাসেজ পাঠিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। সব মিলিয়ে এনারা প্রত্যেকেই বিভিন্ন ভাবে এই সঙ্গীতানুষ্ঠানের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

Post a Comment

0 Comments