ওয়েব ডেস্ক; কলকাতা,১ ফেব্রুয়ারি : মেডিকা গ্রুপ অফ হসপিটাল , একটি অনুপ্রেরণা দায়ক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সেই সব মানুষদের নিয়ে, যারা ব্রেন টিউমারকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন। বলাই বাহুল্য, ব্রেন টিউমার জীবনের দিকে প্রশ্ন তুলে দেয় এবং অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। তবে মেডিকার অভিজ্ঞ নিউরো সার্জেনদের টিম বেশ কয়েক বছর ধরে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে এই ক্ষেত্রে যেখানে ব্রেন টিউমারকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন মানুষ আর কোন বড় শারীরিক ক্ষতিও হয়নি। রোগী এবং তাদের পরিবারের মানুষদের বিশ্বাস এবং সাহায্য এই সাফল্য সম্ভব করছে। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডঃ এল এন ত্রিপাঠী, ডিরেক্টর, মেডিকা ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজিক্যাল ডিজিজেস (মাইন্ড), সিনিয়র কনসালটেন্ট, ব্রেন এবং স্পাইন সার্জেন; ডঃ হর্ষ জৈন, সিনিয়র কনসালটেন্ট - ব্রেন এবং স্পাইন সার্জেন এবং ডঃ সুনন্দন বসু, সিনিয়র কনসালটেন্ট, ব্রেন এবং স্পাইন সার্জেন। এছাড়া এই অনুষ্ঠানে সাহায্য করেন ডঃ প্রদীপ কুমার মন্ডল, কনসালটেন্ট, মেডিক্যাল এবং হেমাটো - অনকোলজি এবং ডঃ সায়ন দাস, সিনিয়র কনসালটেন্ট এবং রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগীয় প্রধান। এই অনুষ্ঠানে ২০ জন মানুষ যারা ব্রেন টিউমারকে হারিয়েছেন, তাদের অসাধারণ জার্নির কথা তুলে ধরা হয়। বর্তমানে তারা যে স্বাভাবিক এবং ভালো জীবন কাটাচ্ছেন নয়, তার সাথে অনেক রোগীকে সম্পূর্ণ সেরে ওঠার দিকে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন।
উপস্থিত সকলকে উদ্দেশ্য করে ডঃ এল এন ত্রিপাঠী বলেন,"নিউরো সার্জারির ক্ষেত্রে, ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা মানে স্রেফ অস্ত্রোপচার করা নয়। বলতে গেলে, এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যালি এগোনো যেমন প্রয়োজন, তেমন অস্ত্রোপচারের পরবর্তী সময়ে রেডিয়েশন এবং কেমোথেরাপির সাহায্য এবং ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে রিহ্যাব খুব গুরত্বপূর্ণ। আমরা অনেক জটিল ব্রেন টিউমারের কেস সফলভাবে চিকিৎসা করতে পেরেছি আমাদের অসাধারণ ক্লিনিক্যাল টিম এবং আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে। এই সাপোর্ট গ্রুপ তৈরির লক্ষ্য হল যাতে তারা অভিজ্ঞ্তা তুলে ধরতে পারেন এবং একে অন্যকে মরাল সাপোর্ট দিতে পারেন। এই সাপোর্ট গ্রুপ সেই সব মানুষকে আবার জীবনের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে এবং সুস্থ, স্বাভাবিক জীবন কাটানোর ক্ষেত্রে সাহস জোগাবে।"
ডঃ হর্ষ জৈন বলেন,"আমরা ভীষণ খুশি এবং আপ্লুত এখানে সবাইকে উপস্থিত দেখে। মেডিকাতে আমরা দায়বদ্ধ সকলকে আন্তর্জাতিক বা বিশ্বমানের পরিষেবা প্রদান করা, যেখানে ক্লিনিক্যাল দক্ষতার সাথে প্রযুক্তির সাপোর্ট রয়েছে। আমরা একটি ইন্টারনাল টিউমার বোর্ড বানিয়েছি যেখানে বিভিন্ন জটিল কেস আলোচনা হয় বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের ক্লিনিশিয়ানদের মধ্যে। এই বোর্ডে রয়েছেন বিভিন্ন নিউরো সার্জেন, নিউরো অনকোলজিস্ট, নিউরো প্যাথোলজিস্ট এবং নিউরো রেডিওলজিস্ট। এর ফলে বিভিন্ন কেসকে অনেক বিস্তৃতি আকারে সমবেত ভাবে আলোচনা করা সম্ভব হয়ে ওঠে।"
ডঃ সুনন্দন বসু বলেন," এখানে সমস্ত ব্রেন টিউমার জয়ীদের উপস্থিতি প্রমাণ করে যে রোগীদের অন্য কোথাও বা দেশের অন্য জায়গায় চিকিৎসার জন্য যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। মেডিকাতে আমরা যে শুধু এই রাজ্যের মানুষদের সারিয়ে তুলতে পেরেছি এমন নয়, বরং সমগ্র পূর্ব ভারত জুড়ে অনেক রোগীর ক্ষেত্রেই আমরা সাফল্য পেয়েছি। তাদের এই ব্যক্তিগত জার্নি তাদের লড়াই করার মানসিকতা এবং মনের জোরের দিকটি তুলে ধরে।"
আরো একজন পুরুষ রোগী, যার বয়স ৩৮ বছর, বলেন,"ব্রেন টিউমার ধরা পড়ার আগে আমার মাঝে মধ্যেই মাথাব্যথা হতো আর আমি ভুলে যেতাম। ২০২২ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর খুব দরকারি সময়ে আমার অস্ত্রোপচার হওয়ার ফলে আমি সুস্থতার পথে রয়েছি। আমি ডাক্তারদের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ, যারা তাদের দক্ষতা এবং নিপুণতার সাথে পুরো চিকিৎসা প্রক্রিয়া করেছেন। বর্তমানে আমি যে শুধুমাত্র চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠেছি নয়, এর সাথে আরামসে কাজের জায়গায় ফিরতে পেরেছি।"
আর উদয়ন লাহিড়ী, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, মেডিকা গ্রুপ অফ হসপিটাল, বলেন," ন্যাশানাল লাইব্রেরী অফ সায়েন্স অনুসারে, ভারতের প্রতি ১০,০০০ মানুষের মধ্যে ১০ জনের সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের টিউমার ধরা পড়ে, যার মধ্যে ২% কেস ম্যালিগন্যান্ট দেখা গিয়েছে। গত ১৪ বছর ধরে আমাদের নিউরো সার্জেনরা সাফল্যের সাথে ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা করে চলেছেন। আমি আজ আপ্লুত তাদের কথা শুনে।তাদের বক্তব্য আমাদের জন্য অমূল্য। তাদের দেখেই আমরা আমাদের লক্ষ্যে ব্রতী হবার ক্ষেত্রে আরো এগোতে পারি যাতে এই ব্রেন টিউমারে অসুস্থদের ক্ষেত্রে আমরা ইতিবাচক ভূমিকা নিতে পারি।"
অয়নাভ দেবগুপ্ত, জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর, মেডিকা গ্রুপ অফ হসপিটালস, বলেন," হসপিটালের শুরুর থেকেই মেডিকার নিউরো সার্জারি বিভাগ অসাধারণ কাজ করে চলেছে। বর্তমানে ১১০০ র মত জটিল টিউমারের কেসের অস্ত্রোপচার হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে আমাদের ক্লিনিশিয়ানদের জন্য যারা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করেন এই চিকিৎসায়।
0 Comments