ওয়েব ডেস্ক; দেবাঞ্জন দাস; ১৮ ফেব্রুয়ারি: বেশ কিছু বছর আগে পর্যন্ত চেনা পরিচিতদের বাড়িতে গেলে তাদের শোকেসে দেখা পাওয়া যেত বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলের মাটির তৈরি পুতুলের। যেগুলি বহন করতো আমাদের বাংলার সংস্কৃতি ঐতিহ্যকে। শুধু তাই নয় তাছাড়াও দেখা যেত মাটির তৈরি বিভিন্ন ঘর সাজানোর জিনিস।
বর্তমান সময়ে তা বেশ কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। আশির দশকে যে চাহিদা ছিল চোখে পড়ার মতন বর্তমানে সেই চাহিদা অনেকটাই কম। বাংলার মাটির পুতুলের জায়গা কেড়ে নিয়েছে বিদেশি পুতুল।
বাংলার মাটির পুতুলের প্রতি আকর্ষণ ফিরিয়ে আনতে এবং বিভিন্ন প্রান্তের যে মাটির জিনিস বাংলার সংস্কৃতি জড়িয়ে রয়েছে সেই গুলির ওপর সচেতনতা ও আকর্ষণ গড়ে তুলতে দক্ষিণ কলকাতার কুঁদঘাট অঞ্চলের গঙ্গাপুরী শিক্ষা সদন বালিকা বিভাগ এবারের সরস্বতী পুজোর নিজেদের থিম হিসেবে তুলে ধরেছিল। থিমের নাম: " চলো গড়ি মাটি দিয়ে বাংলার পুতুল "।
স্কুলের শিক্ষিকা এবং পুজোর কমিটির সম্পাদক সন্দীপা গুহ জানান, " আমাদের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যে মাটির পুতুল নিয়ে বিভিন্ন ঐতিহ্য জুড়ে রয়েছে তা বর্তমান প্রজন্ম প্রায় ভুলে যেতে বসেছে। আমাদের বড়দের কর্তব্য আগামী প্রজন্মকে সেই সমস্ত উপলব্ধি দেওয়া যেগুলি আমাদের বাংলার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সাথে জড়িত। মাটির পুতুলের জায়গা যে বিদেশী বিভিন্ন ধরনের পুতুল নিয়ে নিয়েছে এর ফলে মাটির পুতুলের চাহিদা অনেকটাই কমেছে ফলস্বরূপ মাটির পুতুলের কারিগরদের কাজের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। আমাদের উচিত তাদের পাশে থাকা। আমরা যদি মাটির পুতুল ঘর সাজানোর জন্য ব্যবহার করি বা কাউকে উপহার স্বরূপ দি তাহলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সেই শিল্পীদেরই লাভ হবে এবং তার সঙ্গে আমাদের ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে। "
স্কুল সূত্রে খবর প্রায় ১২ জন ছাত্রীরা বিগত ২৩ দিন ধরে নিরলস পরিশ্রম করে তাদের সরস্বতী পুজোর মণ্ডপ প্রস্তুত করে। মণ্ডব জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলের মাটির পুতুল তার সাথে তার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।
সরস্বতী প্রতিমাও হয়েছে পুতুলের আঙ্গিকে।
সবচেয়ে বড় বিষয় যে পুতুল গুলি মণ্ডপ সাজানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো স্কুলের ছাত্রীরা সারা বছর ধরে ওয়ার্কশপের মাধ্যমে তৈরি করেছে।
0 Comments