ওয়েব ডেস্ক; কলকাতা, ২৮ ফেব্রুয়ারি : কলকাতার এইচসিজি ইকো ক্যান্সার সেন্টার কলকাতায় ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতাকে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে 'ফাইট ক্যান্সার' শীর্ষক এক ক্যাম্পেনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের সচেতনতামূলক উদ্যোগের আয়োজন করেছে। এই কর্মসূচি`র সিরিজের মধ্যে অন্যতম ছিল একটি মেগা সাইক্লোথন, যার সূচনা করেন একজন উল্লেখযোগ্য ব্যবসায়ী, সমাজকর্মী এবং ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তি অবন সাহা। তাঁকেই এহেন উদ্যোগের ক্ষেত্রে প্রতিকূলতার মুখে অবিচল থাকা এবং সংকল্পের প্রতীক করে তুলে ধরা হয়েছিল। এছাড়াও অন্যান্য উদ্যোগের মধ্যে ছিল বহুমুখী স্বাস্থ্য শিবির, সচেতনতামূলক আলোচনা এবং ক্যান্সার সারভাইভারস মিট। এই কর্মসূচিতে ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রাথমিক সনাক্তকরণ, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং রোগকে জয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
সাইকেল নেটওয়ার্ক গ্রো (সিএনজি) এবং উই ফর অল এনজিও-এর সহযোগিতায় আয়োজিত এই সাইক্লোথন নিউটাউনের আইকনিক ক্লক টাওয়ার থেকে শুরু করে ১৬ কিলোমিটার পথ যাত্রা করেছিল। সিএনজি থেকে প্রায় ১০০ জন সাইক্লিস্ট উৎসাহের সঙ্গে এই সাইক্লোথনে অংশ নিয়েছিলেন, যা এই সাইক্লোথনকে শহরের জনস্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতনতা`র প্রচারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সাইকেল র্যালিতে পরিণত করেছিল। এই উদ্যোগটি ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষেত্রে লড়াই, জয় এবং অনুপ্রেরণার বার্তা ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কর্মসূচি`র দ্বিতীয় অংশটি নিউটাউনের নজরুলতীর্থের খোলা প্রাঙ্গনে প্রাণবন্ত পরিবেশের মধ্যে শুরু হয়েছিল, যেখানে ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠা এবং ক্যান্সার রোগীদের পরিচর্যাকারীরা এই বিষয় নিয়ে একটি আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন একজন প্রেরণাদায়ক বক্তা, পীযূষ রঞ্জন ঘোষ। তাঁর অনুপ্রেরণামূলক উপস্থিতির মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল। প্রতিকূলতার মুখে কীভাবে অবিচল থেকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হয়, সেই বিষয়ের ওপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করে ক্যান্সার রোগী এবং তাদের পরিচর্যাকারীদের মনোবলকে বাড়িয়ে তোলেন।
পরবর্তীধাপে, বিস্তারিত মনোযোগ এবং অটল উৎসর্গের মাধ্যমে, কলকাতার এইচসিজি ইকো ক্যান্সার সেন্টার-এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা একটি ব্যাপক স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির পরিচালনা করেন, যেখানে প্রায় ৬০ জন ব্যক্তি`র স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
এর পরবর্তীধাপে, একটি সারভাইভারস মিটও আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে বহু ক্যান্সার সারভাইভার তাঁদের নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে উপস্থিত মানুষের জন্য ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা দেন। এই অনুষ্ঠানে ক্যান্সার সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করার বিষয় নিয়ে পথ নাটিকা, আত্মরক্ষা প্রদর্শন, ওড়িশি নৃত্য এবং সঙ্গীত সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মসূচিও পরিবেশিত হয়। এছাড়াও, কমিউনিটি`র সঙ্গে একটা স্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এইচসিজি ইকো ক্যান্সার সেন্টারের প্রতিশ্রুতির প্রমাণ হিসেবে, কয়েকশ অংশগ্রহণকারীকে প্রিভিলেজ কার্ড প্রদান করা হয়েছিল। এই প্রিভিলেজ কার্ডের সাহায্যে এইচসিজি ইকো ক্যান্সার সেন্টার ভবিষ্যতে চিকিৎসার ক্ষেত্রে পরামর্শ প্রদান করবে।
হেলথকেয়ার গ্লোবাল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড-এর রিজিওনাল বিজনেস হেড ইস্ট অ্যান্ড এপি শ্রী প্রতীক জৈন বলেন, "একটি বড় মাপের সাইক্লোথন, স্বাস্থ্য শিবির, সচেতনতামূলক আলোচনা এবং ক্যান্সার সারভাইবার ব্যক্তিদের সঙ্গে মিলিত হওয়া`র মত ক্যান্সারের বিষয়ে এই ধরণের সচেতনতা কর্মসূচি আমাদের প্রতিশ্রুতিকেই প্রতিফলিত করেছে। এর মাধ্যমে আমরা কলকাতার মানুষদের মঙ্গলের জন্য সচেতনতার প্রচার করে তাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছি। আমাদের এহেন কর্মসূচি`র অপ্রতিরোধ্য সাফল্য এবং এটি স্থানীয় মানুষের ওপর যে ধরণের ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, তাতে আমরা সত্যিই অনুপ্রাণিত হয়েছি। আমরা আমাদের কমিউনিটি`র জন্য এই ধরনের সুযোগ তৈরি করতে পেরে গর্বিত এবং আমাদের এই কাজের প্রতি অবিচল থেকে আমরা ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে যাদের প্রয়োজন, তাদের জন্য সাহায্য করতে সেরা মানের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে চাই।"
এইচসিজি ইকো ক্যান্সার সেন্টার, কলকাতা`র সিওও ডাঃ অমরজিৎ সিং বলেন, "ক্যান্সার হল বিশ্বব্যাপী অসুস্থতা এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ এবং এটি উচ্চমাত্রায় সচেতনতা এবং সক্রিয় পদক্ষেপের দাবি রাখে৷ আমরা কলকাতার এইচসিজি ইকো ক্যান্সার সেন্টার-এ ক্যান্সার রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নিজেদের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ক্যান্সার রোগটি রোগী এবং তাদের পরিজনদের জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে৷ এই ধরনের ঘটনাগুলি ক্যান্সারের হলিস্টিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমাদের এহেন উৎসর্গের জন্য অনুপ্রাণিত করেছে। অভিজ্ঞতাকে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য, সহায়তা প্রদান করতে এবং ক্যান্সার হলেও বেঁচে থাকা যায়, এই বার্তা কমিউনিটির মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমরা এই ধরণের কর্মসূচির মাধ্যমে ক্যান্সার সারভাইবার, পরিচর্যাকারী এবং চিকিৎসকদের একত্রিত করেছি৷ তাঁদের প্রচন্ড উৎসাহ এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষেত্রে কমিউনিটি`র মধ্যে শক্তি এবং সম্মিলিত সংকল্প প্রদর্শন করতে পেরেছে।”
0 Comments