ওয়েব ডেস্ক; ২১ জুন, কলকাতা: মেডিকা গ্রুপ অফ হসপিটাল, কার্ডিওলজি বিভাগে দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করল সফলভাবে প্রথম কনডাকসন সিস্টেম পেসিং (সিএসপি) করে। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় একটি পুরুষ রোগীর উপর হার ডেক্সট্রোপজিশন বা ডেকস্ট্রোকার্ডিয়া (হার্টের এমন পরিস্থিতি যেখানে হার্ট, যা সাধারণত বুকের বাম দিকে থাকে, তা ডান দিকে সরে যায় বিভিন্ন কারণে, যা রোগ বা অস্ত্রোপচারের কারণে হতে পারে)।
এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় গত ২৭শে মে মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটালে। এই পুরো প্রয়োগের ক্ষেত্রে তত্ত্বাবধান করেন ডঃ দিলীপ কুমার, ডিরেক্টর, কার্ডিয়াক ক্যাথ ল্যাব এবং সিনিয়র কনসালটেন্ট ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট এবং ইলেকট্রোফিজিওলজিস্ট। এছাড়া ওনার টিমে ছিলেন ডঃ অশেষ হালদার, কনসালটেন্ট, কার্ডিওলজিস্ট এবং ইলেকট্রোফিজিওলজিস্ট, মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল, ডঃ আনন্দ কুমার পান্ডে, অ্যাসোসিয়েট কনসালটেন্ট, কার্ডিওলজি, মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল। এই চিকিৎসা হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের অধীনে। আজ প্রফেসর ডঃ রবিন চক্রবর্তী, সিনিয়র কনসালটেন্ট, ইন্টার ভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট এবং ইলেকট্রোফিজিওলজিস্ট, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান - কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান, মেডিকা ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিয়াক সায়েন্সের (এমআইসিএস) উপস্থিত ছিলেন এই প্রেস কনফারেন্সে অন্যান্য ডাক্তারের সাথে।
৬৬ বছরের রোগী রেজাউল করিম, যার বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাটে, ছোটবেলায় দেখা দিয়েছিল যক্ষ্মা। এর ফলে ডান দিকের ফুসফুস খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ফুসফুসের পারেনকাইমা হওয়ার ফলে ফাইব্রোসিস হয়, যার ফলে হার্ট বাম দিক থেকে ডান দিকে চলে আসে। এর ফলে শৈশব থেকেই রোগীর হার্ট ডান দিকে ছিল।
এই পরিস্থিতি সাধারণত খুবই বিরল। ডেক্সট্রকার্ডিয়া ছাড়া, জন্মগত সমস্যা ছিল, রোগীর দেখা গিয়েছিল ডেকস্ট্রপজিশন, যা এক ধরনের ডেকস্ট্রকার্ডিয়া। রেজাউলের ক্ষেত্রে সে বছরের পর বছর পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিল। এমনকি সে এক্টিভ ছিল এবং খেলাধুলোতে খুব আগ্রহ ছিল।
ছোটবেলা থেকেই রেজাউলের শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। কিন্তু এই সমস্যা সে অগ্রাহ্য করেছিল। ৬০ এর কাছাকাছি যখন তার বয়স, তখন তার বাই ফাস্কিকুলার ব্লক ধরা পড়ল, যা একটি কার্ডিয়াক কনডাকসন ডিসঅর্ডার। এর ফলে বাম আর ডান বান্ডেল ব্রাঞ্চের মধ্যে ইলেকট্রিক সিগন্যাল আসা যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
এই সমস্যার ফলে রেজাউলের ভালো থাকা অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। এর কারণ হল, হার্টের চেম্বারের (ভেন্ট্রিকেল) পাম্পিং ক্ষমতা অনেক কমেছিল। এর ফলে খুব আস্তে পাম্প হচ্ছিল বা কোন রিদম ছাড়া হচ্ছিল (এই পরিস্থিতিকে বলা হয়ে থাকে অ্যারিথমিয়া)। ইসিজি করার পর বোঝা যায় সামগ্রিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে রেজাউলের বারবার সাইনোকোপ হতে থাকে, অর্থাৎ জ্ঞান ও পেশীর জোর হারানো। এর ফলে হার্ট ব্লক আটকানোর জন্য পেসমেকার লাগানো ছাড়া বিকল্প ছিল না।
0 Comments