সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগী ইনফার্টিলিটি ফিজিশিয়ান ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের দল




ওয়েব ডেস্ক ; ৪ আগস্ট :  জনসংখ্যার বিচারে ভারতবর্ষ বিশ্বের মানচিত্রে একেবারে সামনের সারিতে হলেও ( ১৪৫ কোটি ) আশঙ্কার কথা পৃথিবী জুড়ে সন্তানহীনতার সমস্যা বাড়ছে। আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০% বরিষ্ঠ নাগরিক। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যাওয়ায় জন সংখ্যা বাড়লেও জন্মহার অনেক কমে গেছে। ২০০০ সালে ভারতবর্ষে জন্মহার ছিল ৩.৩৫। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে  ২.১১২। পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা আরও করুণ। এই রাজ্যে জন্মহার মাত্র ১.২। ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভিসের রিপোর্টে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এই বিষয়টি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগী ইনফার্টিলিটি ফিজিশিয়ান ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের দল। সৃষ্টি ইনফার্টিলিটি ক্লিনিকের বার্ষিক সম্মেলনে সরকারি ও বেসরকারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের উদ্যোগে তরুণ প্রজন্মের চিকিৎসকদের ( যারা স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করছেন) জন্য একটি প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। 

এক দিনের এই ওয়ার্কশপে জুনিয়র চিকিৎসকদের বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসার খুঁটিনাটি সম্পর্কে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরষ্কার প্রাপ্ত চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডা. দীপ্যমান গাঙ্গুলি, সৃষ্টির অধিকর্তা বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ ডা. সুদীপ বসু ,  মুম্বাই এর চিকিৎসক ডা. নীতিন চৌবাল, ডা. স্মিত প্যাটেল, ডা. খুরশিদ আলম , ডা. অভিনিবেশ চ্যাটার্জি, ডা. সুজয় দাসগুপ্ত প্রমুখ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের টিম হাতেকলমে বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেবেন। বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় আলটাসনোগ্রাফির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অত্যাধুনিক ফিউচার আলট্রাসনোগ্রাফি, এন্ডমেট্রিওসিসের চিকিৎসায় বাটারফ্লাই পেরিটনেক্টমি, ল্যাটেরাল পেলভিক ওয়ালের ইউরেটার ডিসেকশন, ডুয়াল ট্রিগার ইন আইভিএফ, রোবোটিক সার্জারি ইন গায়নোকলজি ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ডা সুদীপ বসু জানালেন যে অন্যান্য অসুখের  মত বন্ধ্যাত্বের ক্ষেত্রেও শুরুতে চিকিৎসা করালে ভাল ফল পাওয়া যায়, খরচও তুলনামূলক কম হয়। আসলে জীবনযাত্রার ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে সন্তানধারণের সমস্যা বাড়ছে। । স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক উপায়ে সন্তান না হলে কিছু রুটিন টেস্ট করে  সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়। যেমন ধরুন কারুর হরমোনের তারতম্য অথবা কারোর টিউব ব্লক অথবা কোনও সিস্ট আছে।

 সেক্ষেত্রে এগুলির চিকিৎসা করলেই সন্তান ধারণ সম্ভব। যদি এই চিকিৎসা করে কোনও সুফল পাওয়া না যায় তখনই টেস্ট টিউব বেবি অর্থাৎ আইভিএফ এর সাহায্য নিতে হয়। বন্ধ্যাত্ব আসলে একটি মাল্টিফ্যাক্টোরিয়াল সমস্যা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডিম্বাণু বা শুক্রাণুর অস্বাভাবিকতা, ফ্যালোপিয়ান টিউবের গোলমাল, এন্ডোমেট্রিয়াম লাইনিং এর ত্রুটি অপর্যাপ্ত শুক্রাণু ইত্যাদি নানান সমস্যা বন্ধ্যাত্ব ডেকে আনে। আর্টিফিশিয়াল রিপ্রোডাক্টিভ টেকনিক অর্থাৎ এআরটির সাহায্যে এই সমস্যাগুলিকে যতটা সম্ভব পাশ কাটিয়ে সন্তান ইচ্ছুক দম্পতির ডিম্বাণু ও শুক্রাণু সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে ভ্রূণ তৈরি করা হয়। সকলেরই এই বিষয়ে সচেতন হওয়া দরকার।

Post a Comment

0 Comments