জাপানকে টপকে এশিয়ার তৃতীয় শক্তিশালী দেশ হিসেবে উঠে এল ভারত



ওয়েব ডেস্ক ; ২৬ সেপ্টেম্বর : জাপানকে টপকে এশিয়ার তৃতীয় শক্তিশালী দেশ হিসেবে উঠে এল ভারত। এশিয়া পাওয়ার ইন্ডেক্স-এ এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ভারতের এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে, দ্রুতগতির বিকাশ, সম্প্রসারণশীল অর্থনীতি এবং জনসংখ্যায় তরুণদের আধিক্য। 

ভারতের এই উত্থানের মূল কারণগুলি হল :

(১) আর্থিক অগ্রগতি : অতিমারী পরবর্তী সময়ে আর্থিক অবস্থা পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে ভারত। আর্থিক সক্ষমতার ক্ষেত্রে ৪.২ পয়েন্ট বৃদ্ধি ঘটেছে। ভারতের বিপুল জনসংখ্যা এবং জিডিপি-র বৃদ্ধি পিপিপি-র নিরিখে ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ করে তুলেছে। 

(২) ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা : ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পদ ৮.২ পয়েন্ট বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। চিন ও জাপানের তুলনায় ভারতের বড় সুবিধা হল, জনসংখ্যায় তরুণদের আধিক্য, যা আগামী দশকগুলিতে ভারতের আর্থিক অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি কর্মীবাহিনীর সংখ্যাও বৃদ্ধি করবে। 

(৩) কূটনৈতিক প্রভাব : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতকে বিশেষ স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। এক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে ভারতের নিরপেক্ষ অবস্থানের কৌশল। ২০২৩ সালে কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনার ক্ষেত্রে ভারতের স্থান ছিল ষষ্ঠ। সেইসঙ্গে, ভারতের বিপুল জনসংখ্যা এবং আর্থিক সক্ষমতাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। ভারতের সাংস্কৃতিক প্রভাবও আন্তর্জাতিক স্তরে বেশ মজবুত রয়েছে। পারস্পরিক আলাপ-আলোচনায় ভারতের অংশগ্রহণ, সেইসঙ্গে কোয়াড-এ নেতৃত্বদান আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভারতকে বিশেষ ভূমিকায় উন্নীত করেছে। 

এশিয়ায় ভারতের ভূমিকা

২০২৪-এর এশিয়া পাওয়ার ইন্ডেক্স-এ ভারতের শক্তিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যৎ অগ্রগতির ক্ষেত্রেও ভারতের বিপুল সম্ভাবনার বার্তা দেওয়া হয়েছে। আর্থিক বিকাশের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান কর্মীবাহিনী আগামী বছরগুলিতে ভারতের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে, বিশেষত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কূটনৈতিক প্রভাব এবং কৌশল নির্ধারণে ভারত এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। 

এশিয়া পাওয়ার ইন্ডেক্স

অস্ট্রেলিয়ার লোয়ি ইনস্টিটিউট ২০১৮ সালে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির শক্তির ভারসাম্য খতিয়ে দেখার জন্য এশিয়া পাওয়ার ইন্ডেক্স চালু করেছিল। এতে এই অঞ্চলের ২৭টি দেশের শক্তির মূল্যায়ন করা হয়। এই সূচকে দেশগুলির আন্তর্জাতিক স্তরে প্রভাবও খতিয়ে দেখা হয়।

শক্তির পরিমাপের শর্ত ও মাপকাঠিসমূহ :

এশিয়া পাওয়ার ইন্ডেক্স-এ শক্তি পর্যালোচনার ক্ষেত্রে সম্পদ এবং প্রভাব, দুটিই পর্যালোচনা করা হয়ে থাকে। এগুলি হল –

(ক) সম্পদ-ভিত্তিক নির্ধারক : এতে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা, প্রযুক্তির উন্নতি এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক সম্পর্ক প্রভৃতি খতিয়ে দেখা হয়। সেইসঙ্গে সামরিক ক্ষেত্রে ব্যয়, সশস্ত্র বাহিনী, অস্ত্র ব্যবস্থা মিলিয়ে সামগ্রিকভাবে সামরিক শক্তিও বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

(খ) প্রভাব-ভিত্তিক নির্ধারক : এতে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক কূটনীতি পর্যালোচনা করা হয়। সামরিক সহযোগিতা ও অস্ত্র হস্তান্তরের মাধ্যমে জোট ও অংশীদারিত্বের শক্তি যাচাই করা হয়। এছাড়া রয়েছে, কূটনৈতিক প্রভাব বিস্তার, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলির মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধন।

সূত্র পি এই বি

Post a Comment

0 Comments