মনিপাল হসপিটাল কলকাতায় শুরু করল রোবটের সহায়তায় রোসা হাঁটু বদলের অস্ত্রোপচার




ওয়েব ডেস্ক, ১১ সেপ্টেম্বর : মণিপাল হসপিটাল, রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবায় নিজেদের অসাধারণ কৃতিত্বের আরো একবার স্বাক্ষরে রাখল তাদের কলকাতা ফেসিলিটিতে রোসা হাঁটুর সিস্টেম চালু করে। জিমার বায়োমেট এর তৈরি করা, এই অত্যাধুনিক রোবটিক সার্জিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিঃসন্দেহে হাঁটু বদলের সামগ্রিক পদ্ধতিতে অনেকটাই বড় সাফল্য আনতে চলেছে। অ্যাডভান্সড রোবটিক্স এর সাথে নতুন সফটওয়্যার, এই প্রযুক্তি সব মিলয়ে ফলাফলের ক্ষেত্রে এবং রোগীর দ্রুত সেরে ওঠার ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য আনতে চলেছে। বারাসাত এবং আশপাশের জেলা থেকে অনেক রোগী বর্তমানে কলকাতায় আসেন যাতে তারা কম কাঁটা ছেঁড়ার এই হাঁটু বদলের অস্ত্রোপচারের সুযোগ পেতে পারেন। 

সারা বছর প্রায় ২০ লাখ ভারতীয়র হাঁটু বদলের অস্ত্রোপচার প্রয়োজন পড়ে। তবে দেখা গিয়েছে যে মাত্র ২.৫ থেকে ৩ লাখ মানুষ এই অস্ত্রোপচার করান, যার মূল কারণ সামগ্রিক পদ্ধতি নিয়ে ভয়, ইমপ্ল্যান্ট কতদিন থাকবে সেই নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং ভবিষ্যতে আবার কোন অস্ত্রোপচার প্রয়োজন পড়বে কিনা, সেই নিয়ে আশঙ্কা। শেষ পাঁচ বছরে অবশ্য এই সংখ্যা প্রায় তিনগুণ হয়েছে। মোটামুটি আন্দাজ করা গিয়েছে যে অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ বয়স বয়সীদের, যা প্রায় ১৫ কোটির মত, সেখানে অনেক কারণে হাঁটুর পরিস্থিতি সঙ্গীন হতে থাকে। অতিরিক্ত ওজন, বেহিসেবী জীবন যাপন, আর্থরাইটিস বা অন্যান্য ফুলে যাওয়ার মতো দিক প্রধান কারণ হতে পারে। যদিও জনসংখ্যার একটি বড় অংশ এই হাঁটুর সমস্যায় জর্জরিত, তবে বেশিরভাগ রোগী হাঁটু বদলের অস্ত্রোপচার করাতে চান না।।এর অন্যতম কারণ হল সার্জিক্যাল পদ্ধতি এবং অস্ত্রোপচারের পরবর্তী সময়ে সব রকম পদ্ধতি নিয়ে মিথ। 

মণিলাল হসপিটালের রোস্টারে দিয়েছেন বিশেষ ভাবে পারদর্শী অর্থোপেডিক সার্জন, যারা রোসা হাঁটু বদলের পদ্ধতি নিয়ে পুরোদস্তুর সাহায্যের জায়গায় রয়েছেন। এই হসপিটালে ব্যবস্থা রয়েছে সার্বিক চিকিৎসার, যেখানে রোগীদের পরামর্শ দেওয়া থেকে অস্ত্রোপচার পরবর্তী রিহ্যাবের দিকটিও আছে। এই বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের জুন মাস থেকে মণিপাল হসপিটাল ২৫টি সফল হাঁটু বদলের অস্ত্রোপচার করেছে রোসা সার্জিক্যাল অর্থপেডিক রোবটের সাহায্যে। 

ডঃ ঋত্বিক গাঙ্গুলি, কনসালটেন্ট অর্থোপেডিক সার্জন, মণিপাল হসপিটাল, ঢাকুরিয়া, বলেন," হাঁটু বদলের অস্ত্রোপচারের জন্য এই রোসা সার্জিক্যাল অর্থোপেডিক রোবট একাধিক সুবিধা এনে দিয়েছে। এখানে রোগী কেন্দ্রিক ইমপ্ল্যান্ট, আরো নিখুঁত, আগের চেয়ে উন্নত কাইনেমেটিকস অনেকটাই আলাদা করেছে অন্যান্য অর্থোপেডিক সার্জিক্যাল রোবটের থেকে। এর ফলে হাঁটু বদলের অস্ত্রোপচার এখন আর ভালো, রোগীদের সাহায্য করছে যাতে দ্রুত স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফিরতে পারে।"

ডঃ রাজীব বসু, সিনিয়র অর্থোপেডিক সার্জন, মণিপাল হসপিটাল, ঢাকুরিয়া বলেন, "রোসা হল অত্যাধুনিক অর্থোপেডিক হাঁটু বদলের সার্জিক্যাল রোবট। এটি সার্জনদের সাহায্য করে আরো ভালো ভাবে ইমপ্ল্যান্ট বসানোর ক্ষেত্রে, যাতে ব্যথাহীন হাঁটু আরো দ্রুত পেতে পারেন রোগীরা। এই রোবট সেই সব রোগীদের ক্ষেত্রে আরো বেশি সাহায্যের হবে, যারা হাঁটুর ব্যথার সমস্যায় ভুগছেন এবং হাঁটু বদলের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন রয়েছে।" 

ডঃ কাঞ্চন ভট্টাচার্য, সিনিয়র অর্থোপেডিক সার্জন, মণিপাল হসপিটাল, ঢাকুরিয়া, প্রযুক্তির গুরুত্বের দিকে আলোকপাত করে বলেন, "রোবটের অত্যাধুনিক ইনস্ট্রুমেন্টেশনের জন্য আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে, বিশেষ করে এখন আরো নিখুঁত ভাবে অস্ত্রোপচার সম্ভব হচ্ছে। এর ফলে যারা খুব কষ্ট পাচ্ছেন এবং সহজ ভাবে নড়াচড়া করতে পারছেন না, তাদের কাছে বড় আশীর্বাদ এই 

উদ্ভাবন। এই রোসা রোবটের সাহায্যে যাদের হাঁটু বদলের অস্ত্রোপচার প্রয়োজন, তাদের অস্ত্রোপচারের পরবর্তী সময়ে আরো দ্রুত সুস্থতার দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভবপর হবে। এছাড়া জীবন যাপনের মান উন্নয়নের দিকটা অনেক সহজ হতে চলেছে।" 

রোগীরা আশা করতে পারেন দ্রুত সেরে ওঠার, অনেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে হাঁটতে শুরু করতে পারেন। এরপর তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে হালকা কাজ শুরু করা যেতে করে। অস্ত্রোপচার পরবর্তী সময়ে প্রায় ৬-৮ সপ্তাহ পর গলফের মত খেলার কথা ভাবা যেতে পারে। একদিন ৬৭ বছর বয়সী, যার অতি সম্প্রতি মণিপালে হাঁটু বদলের অস্ত্রোপচার হয়েছে, জানান," আমি যতটা ভেবেছিলাম, তার চেয়েও আগে দুই পায়ে দাঁড়াতে পেরেছি। আমি মণিপালে যে যত্ন পেয়েছি, তা অতুলনীয়। বলাই বাহুল্য, রোসা হাঁটুর সিস্টেম ফারাক এনে দিয়েছে।"

Post a Comment

0 Comments