ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মেলন ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজন




ওয়েব ডেস্ক; ২ ফেব্রুয়ারি : সুইচঅন ফাউন্ডেশন এবং ডিস্ট্রিক্ট রুরাল ডেভেলপমেন্ট সেল (ডিআরডিসি)-এর যৌথ উদ্যোগে ৩১শে জানুয়ারি থেকে ১লা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নদিয়ার কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ গ্রাউন্ড-এ, আঞ্চলিক সরস মেলার অংশ হিসাবে একটি সম্ভাবনাময় ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মেলন ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজিত হয়। এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল পশ্চিমবঙ্গে কৃষক উৎপাদক সংগঠন ও স্ব-সহায়ক গোষ্ঠী -গুলির জন্য একটি শক্তিশালী ব্যবসায়িক পরিবেশ গড়ে তোলা, যা আঞ্চলিক কৃষক ও হস্তশিল্পীদের উন্নতির সুযোগ করে দেবে।

পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে ও পশ্চিমবঙ্গের কৃষিজ পণ্য ও হস্তশিল্পের বৈচিত্র্য উপস্থাপন করতে, দুই দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে অনেক কৃষি উৎসাহী ব্যক্তি, বিশেষজ্ঞ, সরকারি প্রতিনিধি এবং গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডাররা একত্রিত হন। মোট ১৫টি কৃষক উৎপাদক সংস্থা, ১০০ স্ব-সহায়ক গোষ্ঠী সদস্য, ১০টি উৎপাদক গোষ্ঠী এবং ৩টি সিবিবিও এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে জৈব পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হস্তচালিত তাঁত, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, শাকসবজি, তৈলবীজ, খেজুর গুড় এবং অন্যান্য পণ্য প্রদর্শন করে।

এই ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মেলনটি উদ্বোধন করেন মাননীয় সৈকত গাঙ্গুলি, ডব্লিউবিসিএস (এক্সিকিউটিভ) - প্রোজেক্ট ডিরেক্টর, ডিআরডিসি নদিয়া, পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন বিভাগের অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
সারা ভারত থেকে ২০ টিরও অধিক ক্রেতা গোষ্ঠী যেমন এফএমসিজি সংস্থা, পাইকারি ব্যবসায়ী, শীর্ষস্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ী, বাজার বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়িক প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে অংশ নেয় ও কৃষক দের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। অংশগ্রহণকারী ক্রেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া, বিগ বাস্কেট, মোর, বেয়ার ক্রপ সায়েন্স, ম্যাগিসাই ট্রেডার্স, ভিন্টেজ অ্যারোমা, ন্যানি'স গার্ডেন প্রমুখ। এই সম্মেলনে ১৫টি এলওআই স্বাক্ষরিত হয়, যা কৃষকদের জন্য বাজার সংক্রান্ত নতুন সুযোগসুবিধা ও বৃহত্তর ক্রেতা সংযোগ নিশ্চিত করেছে।

 সৈকত গাঙ্গুলি, ডব্লিউবিসিএস (এক্সিকিউটিভ)-প্রোজেক্ট ডিরেক্টর, ডিআরডিসি নদিয়া বলেন,"এই আয়োজন গ্রামীণ উদ্যোক্তা ও ক্রেতাদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুবন্ধন হিসেবে তাদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করেছে, প্রবৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করেছে এবং সুস্থায়ী উন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করেছে।"

একজন কৃষক সদস্য জানান, "এই সম্মেলন আমাদের নতুন ক্রেতাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে এবং আমাদের জৈব কৃষিপণ্যের মূল্য তুলে ধরতে সহায়তা করেছে। সুইচঅন-এর সহযোগিতায়, এখন আমাদের ফসলের উৎপাদন ও বিক্রির আরও ভালো সুযোগ তৈরি হয়েছে।"

দ্বিতীয় দিনে, পৌষ্টিক লাইফ দ্বারা একটি সমন্বিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজিত হয়, যেখানে পণ্য প্যাকেজিং, লেবেলিং, গুণমান মানদণ্ড ইত্যাদি বিষয়ে বাজারের চাহিদার সাথে মানানসই হওয়ার জন্য কৃষক ও কারুশিল্পীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা হয়। বিশেষজ্ঞরা সরকারি প্রকল্প, ব্যাংক ঋণের সুযোগ, ব্র্যান্ড তৈরির কৌশল সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেন। সুস্থায়ী কৃষি অনুশীলনের গুরুত্ব এবং জৈব পণ্যের ক্রমবর্ধমান বাজারের সম্ভাবনাকে গুরুত্বসহকারে এই কর্মশালায় তুলে ধরা হয়।
সুইচঅন ফাউন্ডেশন-এর জেনারেল ম্যানেজার, সুরজিত চক্রবর্তী বলেন,"আমরা কৃষকদের আয় এবং জীবিকা উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মেলন কৃষকদের পাশাপাশি এফপিও এবং এসএইচজি গুলিকে বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করে, নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ ও দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্ব তৈরির পথ প্রশস্ত করছে।"

এই তাৎপর্যপূর্ণ অনুষ্ঠান পশ্চিমবঙ্গের কৃষি ও উৎপাদক গোষ্ঠীগুলির দীর্ঘমেয়াদী ও সুস্থায়ী বৃদ্ধির ভিত্তি স্থাপন করেছে, যা আয় বৃদ্ধি, উন্নত ব্যবসায়িক অনুশীলন এবং প্রসারিত বাজার সংযোগের পথ সুগম করেছে।

Post a Comment

0 Comments